অবশেষে ভুয়া র্যাব ধরা পড়ল র্যাবেরই হাতে
ব্যাংকে ঢুকে একজন আগেই দেখতেন যে, কে কত টাকা তুলছে। যার কাছে সবচেয়ে বেশি টাকা, তিনি হয়ে যেতেন ‘টার্গেট’। পরে ‘টার্গেট’ ব্যাংক থেকে বের হলেই সুবিধামতো জায়গায় ছিনতাই করত এই চক্র। ছিনতাইয়ের সময় নিজেদের পরিচয় দিতেন তাঁরা র্যাবের সদস্য, কখনো বলতেন তাঁরা সাংবাদিক।
এমনই এক চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাবের সদস্যরা। আজ সোমবার নগরীর কাওলায় অভিযান চালিয়ে ওই সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভুয়া র্যাব সদস্যদের ধরতে অভিযানের সময় ভিন্ন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয় র্যাবের টিমকে। র্যাব বলছে, সত্যিকারের র্যাব সদস্যদের ভুয়া র্যাব সদস্যরা তাঁদের মতো মনে করে। ক্যাম্পে ধরে এনে ভুয়া র্যাব সদস্যরা পরে উপলব্ধি করে তাঁরা প্রকৃত র্যাবের হাতেই ধরা পড়েছে।
এসব অপরাধের কিছু সিসিটিভি ফুটেজ এখন র্যাবের হাতে। ফুটেজগুলোতেই এসব প্রমাণ পাওয়া যায়।
আজ সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান। তিনি জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা রাজধানীসহ দেশের ১৩টি অঞ্চলে অপহরণ, চাঁদাবাজি, নকল চেকপোস্ট বসিয়ে টাকা আদায়সহ বিভিন্ন অপরাধে লিপ্ত ছিলেন। তাদের প্রতারণার শিকার হয়েছে বহু মানুষ।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘তারা যে সকল তথ্য দিয়েছে, সে পর্যন্ত প্রায় ১৩টি অপরাধ তারা সংগঠিত করেছে। এবং টাকার মূল্য হবে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার মতো। এরা শুধুমাত্র ঢাকা শহর না, ১৩টি অঞ্চলে এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।’
এ ছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে র্যাবের স্টিকার লাগানো মাইক্রোবাস, কিছু অস্ত্র, গুলি, র্যাবের জ্যাকেট, হ্যান্ডকাফ, ওয়াকিটকি ও ভুয়া সাংবাদিকের পরিচয়পত্র জব্দ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এই ভুয়া র্যাবের প্রতারণার শিকার হওয়া এক ব্যবসায়ী ও এক সাবেক সেনাবাহিনীর সদস্য।
ওই সাবেক সেনা সদস্য বলেন, ‘কুমিল্লা থেকে আমি ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আমি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে দিতে যাচ্ছিলাম। তখন অ্যাপ্রোন পরা অবস্থায়, ওই যে লাস্টের যে লোকটা আর সাথের যে লোক, ওই দুইজন নেমে, কয়েকটা থাপ্পর মেরে আমাকে রাস্তার ওপর ফেলে দিছে।’
আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘দুইটা লোক র্যাবের পোশাক পরা। দুই সাইডে দাঁড়াইয়া কইতাছে, তোর নামে ১০টা, ১৫টা মামলা আছে। এরা আমারে অনেক মারা মারছে। হাত বানছে, তো একটা রোল দিয়া। টাকাগুলিও নিয়া গেছে।’
মুফতি মাহমুদ খান আরো বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে যে অভিযান শুরু হয়েছিল, সে অভিযান এখনো চলমান আছে। আমরা অভিযান শুরু করেছিলাম, যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে, সেটা আপনারাই যাচাই করে দেখবেন, কতটুকু আমরা সফল হয়েছি। একবারে মাদক শূন্য করার মতো পরিস্থিতি এখনো হয়নি। ’