বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন কি না এবং তাঁর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হবে কি না, তা নির্ধারণ করবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

আজ সোমবার বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম ও কবিতা খানম এনটিভি অনলাইনকে এই তথ্য জানান।

মো. রফিকুল ইসলাম জানান, খালেদা জিয়া মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন কি না তা ঠিক করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। আইনানুগ একজন প্রার্থীর যোগ্যতা কিংবা অযোগ্যতা কি তা লেখা থাকবে মনোনয়নপত্রেই। সব কিছু দেখে রিটার্নিং কর্মকর্তা সিদ্ধান্ত নিবেন তাঁর কী করণীয়। তবে খালেদা জিয়া চাইলে কমিশনে আপিল করতে পারবেন।

একই বিষয়ে জানতে চাইলে আরেক নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম মো. রফিকুল ইসলামের কথার সঙ্গে একমত পোষণ করে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, এখন যদি খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র রিটার্নিং কর্মকর্তা বাতিল করেন সেক্ষেত্রে তিনি আইন অনুযায়ী কমিশনে আপিল করতে পারবেন। আপিলের কারণে নির্বাচন কমিশনেই একটি কোর্ট বসানো হবে। ওই কোর্টে তাঁর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। শুনানিতে নিষ্পত্তি হবে খালেদা জিয়া প্রার্থী হতে পারবেন কি না।

কবিতা খানম আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বিরুদ্ধে গেলে খালেদা জিয়া হাইকোর্টে আপিল করতে পারবেন। তখন কোর্ট সবার পর্যবেক্ষণ দেখবেন, কোর্টেরও একটি নিজস্ব পর্যবেক্ষণ থাকবে। এ ছাড়া আইন কী বলে না বলে তা দেখে কোর্ট একটি নির্দেশ দিবেন।

খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র যদি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা বাতিল ঘোষণা করেন সেক্ষেত্রে বিএনপির পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে- এমন প্রশ্নে  বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র যদি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা বাতিল করে দেন সেক্ষেত্রে আমাদের আইনজীবীরা আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাবেন। তারপর যা করার দলীয়ভাবে করবেন।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, জমা হওয়া মনোনয়নপত্র বৈধ কি অবৈধ সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার রিটার্নিং কর্মকর্তার। রিটার্নিং কর্মকর্তা কারও মনোনয়নপত্র অবৈধ বলে বাতিল করলে তার বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করতে পারবেন। কমিশন সেই আবেদন বাতিল করলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবেন, কমিশন সে অনুযায়ী কাজ করবে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে প্রার্থীর যোগ্যতা ও অযোগ্যতা সম্পর্কে বলা আছে, কোনো ব্যক্তি কোনো আদালতে দুই বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন।

নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে অংশ নিতে আজ খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র কেনার মধ্য দিয়ে বিএনপির মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করেছে। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে ফেনী-১ এবং বগুড়া-৬ ও ৭ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম তোলা হয়েছে। এদিকে উচ্চ আদালত এরই মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। এ ছাড়াও নিম্ন আদালতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার ৭ বছরের সাজা হয়েছে। খালেদা জিয়া বর্তমানে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন।