প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে চতুর্থ শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। গত সোমবার দুপুরে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম অ্যালেক্স আপন। তিনি ওই বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক।
ঘটনা জানাজানির পর সোমবার সন্ধ্যায় শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপর মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষক পলাতক রয়েছেন।
যৌন নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক সহপাঠী জানায়, সোমবার দুপুরে ওই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী স্কুলের অন্য এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ার সময় প্রধান শিক্ষক অ্যালেক্স আপন ছাত্রীর মায়ের বরাত দিয়ে তাঁর রুমে ডেকে নেন। এ সময় তিনি রুমের দরজা আটকে ছাত্রীটির শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে থাকেন।
ছাত্রীটির ফিরে আসায় বিলম্ব দেখে ওই সহপাঠী প্রধান শিক্ষকের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ দেখতে পায়। এ সময় ভেতরে থাকা ছাত্রীটির চিৎকার শুনে সে দরজায় ধাক্কা দিলে শিক্ষক দরজা খুলে বের হয়ে আসেন এবং বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য দুজনকে শাসিয়ে দেন। পরে বাড়ি ফিরে তারা বিষয়টি তাদের অভিভাবকদের কাছে খুলে বলে।
স্থানীয়রা জানান, অ্যালেক্স আপন দীর্ঘদিন ধরে নিজের বাড়ির কয়েকটি কক্ষে স্কুল খুলে পাঠদানের নামে বিভিন্ন সময় স্কুলের ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে আসছেন। এমন একাধিক ঘটনায় শিক্ষক অ্যালেক্স আপনের বিরুদ্ধে এলাকায় সালিশ-দরবার হয়। কিন্তু দরবারের কিছুদিন পর তিনি আবারও নতুন ঘটনার জন্ম দেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করলেও অভিভাবকদের অসহযোগিতার কারণে প্রতিবাদ করা হয়ে উঠছিল না।
এদিকে ইউএনওর কাছে অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি জানতে পেরে যৌন নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর মামার কাছে মোবাইল ফোনে বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা চান অ্যালেক্স আপন এবং মীমাংসার প্রস্তাব দেন তিনি। আলাপকালে তাঁর ও অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের মোবাইল ফোনের অডিও রেকর্ড গণমাধ্যমকর্মীদের শোনান শিক্ষার্থীর মামা।
প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও তাঁর স্ত্রী জানান, তাঁর স্বামী ঘটনার সময় ওই শিক্ষার্থীকে রুমে ডেকে নিয়ে তার পরনের জামা ঠিক করে দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার কিছু লোক তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান জানান, যৌন হয়রানির ঘটনার কোনো অভিযোগ তিনি পাননি। অভিযোগ এলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।