আ. লীগের সংঘর্ষে নিহত ৪ : দুই মামলায় গ্রেপ্তার ১৩
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চল বাঁশগাড়ি ও নীলক্ষায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন নিহতের ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার রায়পুরা থানা পুলিশ বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।
এ সময় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে নয়টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ছয়টি তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়।
এসব তথ্য জানান নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হাসান। তিনি জানান, গতকাল নীলক্ষা এলাকা থেকে নৌকা নিয়ে পালানোর সময় মেঘনা নদী থেকে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জাকির হাসান বলেন, ‘মূলত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এই সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এই আধিপত্য দীর্ঘদিনের। দুই নেতা সাহেদ সরকার ও সিরাজুল চেয়ারম্যান মারা যাওয়ার পর কিছু দিন এই সংঘর্ষ বন্ধ ছিল। গতকাল সকাল থেকে হঠাৎ সাহেদ সরকারের সমর্থকরা অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। ওই সময় প্রতিপক্ষ সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল চেয়ারম্যানের সমর্থকরা বাধা দেয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই সংঘর্ষ বাঁশগাড়ি ছাড়িয়ে পাশের ইউনিয়ন নীলক্ষার গোপীনাথপুর গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে।’
জানা যায়, নরসিংদী আওয়ামী লীগের প্রয়াত দুই নেতা সাহেদ সরকার ও সিরাজুল চেয়ারম্যানের মধ্যে বহুদিন ধরে সংঘর্ষ চলে আসছিল। এই দুই নেতা মারা গেলেও, এরই জের ধরে গতকাল সকালে বাঁশগাড়ি গ্রামের বালুমাঠ এলাকায় বর্তমান চেয়ারম্যান আশরাফুল হক ও প্রয়াত হাফিজুর রহমান সাহেদ সরকারের সমর্থক জামাল, জাকির ও সুমনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী তোফায়েল রানা নিহত হয়। এ সময় আহত হয় কমপক্ষে ১০ জন।
এ ঘটনার জের ধরে দুপুর ২টার দিকে উপজেলার নীলক্ষা ইউনিয়নের গোপীনাথপুর বীরগাঁও কান্দাপাড়া গ্রামে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে বিকেলে সোহরাব মিয়া (৩০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। এখবর ছড়িয়ে পড়লে সন্ধার পর সংঘর্ষ আরো ভয়াভহ রূপ নেয়। থেমে থেমে চলা সংঘর্ষের মধ্যে সন্ধ্যার পর স্বপন (২৭) ও মরম আলী (৪০) নিহত হন। রাত পর্যন্ত আহতের সংখ্যা দাঁড়ায় অর্ধ শতাধিক।