খালেদা জিয়া অবশ্যই নির্বাচন করতে পারবেন : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দাবি করেছেন, কারান্তরীণ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে আইনগতভাবে কোনো বাধা নেই।
আজ বুধবার দুপুরে দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এই দাবি করেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুর্নীতির অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত (কনভিকশন অ্যান্ড সেন্টেন্স) বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানসহ পাঁচ নেতার দণ্ড স্থগিত চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, নিম্ন আদালতে দুই বছরের বেশি দণ্ড হলে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তবে আপিল বিভাগে দণ্ড স্থগিত ও বাতিল হলেই কেবল অংশ নিতে পারবেন।
এ ক্ষেত্রে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে কি না—সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে ব্রিফিংয়ে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম বলেন, ‘এখানে শর্ত হলো দুটি। তা হলো, তিনি যদি দণ্ডিত হন, তাহলে পারবেন না। এরই মধ্যে তিনি যদি তাঁর দণ্ড বা সাজা থেকে মুক্তিলাভ করেন, তাহলে তাঁর সাজা বাতিলের তারিখ থেকে পাঁচ বছর তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। কাজেই খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে দুটি প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। যেকোনো আদালত তাঁর রায় দিয়ে এই সাংবিধানিক প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করতে পারেন না।’
তবে আজকের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী দাবি করেছেন, ‘আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে অবশ্যই পারবেন। এ বিষয়ে আইনে কোনো বাধা নেই।’
‘বাংলাদেশে নজির হলো আপিল করেই নির্বাচন করা যাবে। কারণ আপিলকে ধরা হয় চলমান বিচারের অংশ,’ যোগ করেন বিএনপি নেতা।
‘নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, শঙ্কাও বাড়ছে’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, জনগণের মধ্যে তত সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৮৫টি উপজেলায় নির্বাচনী কর্মকর্তা নেই, যা এরই মধ্যে গণমাধ্যমে বেরিয়েছে। এ অবস্থায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে বাছাই করে আওয়ামীমনা কর্মকর্তাদের নির্বাচনী দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমাদের অভিযোগগুলো অতিকথন নয়, বরং নির্বাচন নিয়ে সরকারের চক্রান্তের গভীরতা ও ব্যাপ্তি আরো স্পষ্ট হচ্ছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সন্ত্রাসের উর্বর ক্ষেত্র বানাবে ক্ষমতাসীন দল। তার আলামতগুলো এখন ফুটে উঠতে শুরু করেছে। প্রায় প্রতিদিনই সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের গোপন বৈঠকের তথ্য ফাঁস হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগ ও ইসির পক্ষ থেকে এসব বৈঠকের কথা অস্বীকার করা হলেও তথ্যগুলো যে সঠিক, এটির বাস্তব প্রমাণ পাওয়া গেছে।’
রিজভী আরো বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সব প্রস্তুতি প্রশ্নসাপেক্ষ। এই কারণে কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, নির্বাচনের বিজয় আনুষ্ঠানিকতামাত্র। সেই একতরফা নির্বাচনের আভাসই আমরা ফুটে উঠতে দেখছি।’