প্রতি আসনে ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয় কমিটি
নির্বাচন পরিচালনার জন্য সারাদেশে ৩০০টি আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয় কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর প্রীতম-জামান টাওয়ারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ঢাকা মহানগর সমন্বয় কমিটির সভায় এ কথা জানান বরকত উল্লাহ বুলু।
বুলু বলেন, ‘প্রতিটি সংসদীয় আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয় কমিটি হচ্ছে। এই সমন্বয় কমিটির মাধ্যমে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট হবে। ঢাকা শহরের প্রত্যেকটি অলি-গলি-পাড়াতে এবং সারাদেশে সংসদীয় আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয় কমিটির মাধ্যমে ভোট পরিচালনা হবে।’
বরকত উল্লাহ আরো বলেন, ‘এরই মধ্যে প্রত্যেক জেলায় দায়িত্বশীল নেতার নামে চিঠি চলে গেছে। তাঁরা অলরেডি কাজ শুরু করে দিয়েছেন। যেহেতু জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতীক একটাই ধানের শীষ, তাই এখানে বিভেদ সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই। যেখানে যে ব্যক্তিটি উপযুক্ত, রাজনৈতিক অবস্থান যার শক্ত, তিনিই হবেন সমন্বয় কমিটির প্রধান।’
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ‘সারাদেশে ৭৮৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। এর মধ্যে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রয়েছেন ১৪১ জন। এটা একটা ন্যক্কারজনক ঘটনা। সব ব্যাংক আজ আওয়ামী-লুটেরাদের দখলে। ব্যাংকের মালিক তারা। তাদের কোনো প্রার্থী আর্থিক ঋণ খেলাপির কারণে বাতিল হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। অথচ এস এম কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ক্রেডিট কার্ডের সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার ঋণ রিনিউ করা হয়নি বলে। অন্যদিকে অনেকের ৬-৭ কোটি টাকা গ্যাস বিল বাকি থাকার পরও তাদের মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করেছে। এমন অনেক ঘটনা এ দেশে ঘটেছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রতিদিন প্রতিটি জেলায় ৬০, ৭০, ৮০ জন করে আমাদের নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নতুন নতুন মামলা হচ্ছে। আবার পুরোনো মামলায় আমাদের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ অবস্থার মধ্যে বাংলাদেশের নির্বাচন কীভাবে হবে আমরা বলতে পারি না।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে পোলিং এজেন্টদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থপনা কমিটি আওয়ামী লীগের এমপি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা দখল করে আছে। তারা ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ওপর প্রভাব বিস্তার করছেন। নির্দেশনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলে আপনাদের চাকরি থাকবে না বলে হুমকি দিচ্ছে তারা। এমন একটা পরিস্থিতির মধ্যে নির্বাচন করছি যেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তো নেই-ই, তারপরও আপনারা দেখেছেন বিতর্কিত এসপি যিনি আমাদের চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুকের ওপর নৃশংসভাবে হামলা করেছে। তাকে বেধড়ক মারধর করেছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যার ন্যক্কারজনক পক্ষপাতিত্বের কারণে ধানের শীষের জনপ্রিয় প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার হেরেছেন। তাকে আবার নারায়ণগঞ্জে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বরকত উল্লাহ বলেন, ‘আগামী ৮ তারিখের পরে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করে বাংলাদেশে নতুন বিপ্লব ঘটাতে চাই। প্রতিকূল অবস্থার মধ্য থেকেই আমরা বিজয় ছিনিয়ে আনতে চাই। মানুষ এই দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়। নারকীয় অবস্থা থেকে মুক্তি চায়, ব্যাংক লুটেরাদের হাত থেকে মানুষ মুক্তি চায়। কর্তৃত্বপরায়ণ সরকারের হাত থেকে মানুষ মুক্তি চায়।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ঢাকা মহানগরের সমন্বয়ক বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ও কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার হাবিবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব ইকবাল সিদ্দিকী, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম।