মনোনয়নপত্র ফিরে পেতে খালেদা জিয়ার রিটের আদেশ কাল
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র ফিরে পেতে কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা হাইকোর্টে রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। আগামীকাল এ বিষয়ে আদেশ দেবেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও মো. ইকবাল কবিরের দ্বৈত বেঞ্চ শুনানি শেষে এ আদেশদেন।
এর আগে এ বিষয়ে সকাল ১১টা থেকে শুনানি শুরু হয়। টানা সোয়া দুই ঘণ্টা শুনানির পর দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত শুনানি শেষে মুলতবি করা হয়। দুপুর ২টার পর আবার শুনানি শুরু হয়ে পৌনে ৪টা পর্যন্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন তাঁর আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, অন্যদিকে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম কথা বলেন।
শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বেগম জিয়াকে যেসব মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে এসব মামলা আপিল করা হয়েছে। আপিল হওয়ার পর রায়ের সাজা কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয়ংভাবে স্থগিত হয়ে যায়। এ ছাড়া সরকারি দলের সাবেক দুই মন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর ও মায়া চৌধুরী বিচারিক আদালতে দণ্ড প্রাপ্ত হওয়ার পর তাঁরা আপিল করলে আপিল চলাকলীন নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। পরে মন্ত্রী হয়ে পুরো সময় পার করেছেন। সুতরাং আপিল মূল মামলার অংশ। আপিল যতক্ষণ নিষ্পত্তি না হবে তখন আসামিকে দণ্ডিত বলে ধরা যাবে না। কেননা কোনো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির আপিল করার পর তাঁর দণ্ড কার্যকর করার সুযোগ থাকে না। যতক্ষণ না আপিল নিষ্পত্তি হবে। সুতরাং খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সংবিধানের ৬৬ ধারা উদ্ধৃত করে আদালতকে বলেন, ‘দুই বছরের বেশি কোনো দণ্ডিত ব্যক্তি নির্বাচন করার কোনো সুযোগ নেই। সুতরাং খালেদা জিয়া দুটি মামলায় ১৭ বছর দণ্ডিত হয়েছেন। তাঁর নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই।’ বিকেল পৌনে ৪টায় শুনানি শেষে আদালত আগামীকাল এ বিষয়ে আদেশের জন্য দিন ধার্য রাখেন।
কারাবন্দি খালেদা জিয়ার পক্ষে ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়া হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তারা তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন।
এরপর গত ৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল আবেদন করেন। গত শনিবার শুনানির সময় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। তাঁরা তিনটি আসনেই খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করেন।
এর পরই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভোটের লড়াইয়ে ফিরতে শেষ আশ্রয়স্থল হাইকোর্টে আসেন। গতকাল রোববার বিকেলে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করা হয় বলে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। দ্বৈত আদেশের এ রায়ের কপি মোট দুই পৃষ্ঠা।
গতকাল ৯ ডিসেম্বর ছিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়। আজ ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ। আর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৩০ ডিসেম্বর।