অ্যাম্বুলেন্সে করে এসে পুলিশ হামলা চালায় : শরীফুল
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার চৌমুরি বাজারে বুধবার রাতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনের বিএনপির প্রার্থী শরীফুল আলম। বৃহস্পতিবার বিকেলে কুলিয়ারচরের বেতিয়ারকান্দিস্থ নিজ বাসভবনের চত্বরে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শরীফুল আলম জানান, বুধবার রাতে উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের চৌমুরি বাজারে তাঁর পথসভার শেষ পর্যায়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে কুলিয়ারচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আজিজুল হক ও এহসানুলের নেতৃত্বে সাদা পোশাকে একদল পুলিশ সদস্য অতর্কিতে হামলা চালায়। এ সময় তাঁকেসহ বিএনপি নেতা-কর্মী সমর্থকদের বেধড়ক পেটাতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও এসে যোগ দেন সেই হামলায়। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে এ সময় বিএনপির অর্ধশত নেতা-কর্মী আহত হন বলে তিনি দাবি করেন।
অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তা এর আগেও তাঁর নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রেপ্তার ও মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজিসহ ভয়ার্ত পরিবেশ তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ করে শরীফুল আলম অবিলম্বে ওই দুই পুলিশ সদস্যের বদলির দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম জানান, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাংসদ নাজমুল হাসান পাপন প্রতিদিন জনসভা, পথসভা ও গণসংযোগ অবাধে চালিয়ে গেলেও তিনি এবং তাঁর নেতা-কর্মীরা ঘর থেকে বের হলেই অত্যাচার, হামলা-মামলার শিকার হয়ে নির্যাতিত হচ্ছেন।
শরীফুল আলম সাংসদ নাজমুল হাসান পাপনকে অভিযুক্ত করে বলেন, তাঁকে সুকৌশলে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরাতে তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকাসহ ভৈরব-কুলিয়ারচর এলাকায় ৩০টিরও বেশি মামলা দায়ের করিয়েছেন। যা অত্যন্ত অনৈতিক ও অরাজনৈতিক কাজ বলে এর নিন্দা জানান তিনি।
শরীফুল দাবি করেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সঙ্গে ২০০৮ সালে এবং পরবর্তীতে উপ-নির্বাচনে নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি পারাজিত হলেও, এমন নির্যাতনের শিকার হননি। মানসিক চাপেও পড়তে হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের মাঠের নানা অনিয়ম তুলে ধরে বেশ কয়েকবার নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেন তিনি। সেখান থেকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য বলা হলেও, কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি নির্বাচন কমিশন, জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, নির্বাচনী মাঠে তাঁকে যেনো সমান সুযোগ দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজাহারুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজি ইসমাইল মিয়া, নাজমুল আলম, আশফাক আহমেদ, কুলিয়ারচর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ নূরুল মিল্লাত, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজি রফিকুল ইসলামসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।