পাগলকেও বিএনপির ক্যাডার বানিয়ে মামলা দিচ্ছে : হাসিনা আহমদ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই বলে দাবি করেছেন এ আসনে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট হাসিনা আহমদ। আজ সোমবার সকালে পেকুয়া উপজেলায় নিজ বাস ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অব্যাহত সশস্ত্র হামলায় চরম নিরাপত্তাহীনতার কারণে সাতদিন ধরে প্রচারণা কাজ করতে না পেরে বাড়িতে অবরুদ্ধ হয়ে আছেন বলে অভিযোগ করেন হাসিনা আহমদ। নৌকার প্রার্থীর নেতৃত্বে চকরিয়া-পেকুয়ায় বিএনপির নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
হাসিনা আহমদ বলেন, ‘ওই সব হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চকরিয়া ও পেকুয়া থানায় মামলা নিয়ে গেলেও পুলিশ আমাদের ফিরিয়ে দিয়েছে। অথচ আওয়ামী লীগ নিজেরাই নিজেদের নির্বাচনী অফিসে আগুন দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের আসামি করে মামলা দিয়েছে।’
চকরিয়া ও পেকুয়া থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৩টি হয়রানিমূলক মামলায় শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে উল্লেখ করে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী বলেন, ‘এমনকি একজন পাগলকেও বিএনপি ক্যাডার বানিয়ে গ্রেপ্তার করে মামলা দিয়েছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, গত ১২ থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে হওয়া ওই সব মামলায় সংবাদকর্মী, সাংবাদিকের অটোরিকশার চালক থেকে শুরু করে বিদেশে অবস্থানকারী ব্যক্তি ছাড়াও কারাগারে থাকা লোকজনকে আসামি করা হয়েছে।’
হাসিনা আহমদ বলেন, ‘তিন-চারদিন আমি আমার কাজ করতে পেরেছি। এরপর থেকেই বাধা আসা শুরু করল। প্রতিনিয়ত মামলা-হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, আমাকে বের হতে দিচ্ছে না। আমার পাড়ার এখানে এসে পর্যন্ত পোস্টার, ব্যানার জ্বালায়ে ফেলতেছে। আমার নির্বাচনী অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছে। আর আমাদের নেতাকর্মীদের শত শত মামলা দেওয়া হচ্ছে। শত শত মানুষকে আসামি করা হচ্ছে। সংবাদকর্মী, আমার প্রেসের কাজ করে ওকে আসামি করা হইছে। আপনারা শুনে আশ্চর্য হবেন আমার ভাগ্নির জামাই ঢাকায় চাকরি করে ব্যাংকে, তাঁকে পর্যন্ত আসামি করা হয়েছে।’
‘সাতদিন হয়েছে আমি নির্বাচনী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারছি না। বাইরে যেতে পারছি না, গণসংযোগ করতে পারছি না। আমার প্রশ্ন হলো আপনাদের সবার কাছে, আমি তো একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি কেন আমার নির্বাচনী প্রচারকাজ চালাতে পারব না। সরকারদলীয় পক্ষের যিনি আছেন তিনি যদি নির্বিঘ্নে পুলিশ পাহারা নিয়ে নির্বাচনী প্রচারকাজ চালিয়ে যেতে পারেন, আমরা কেন আমাদের নির্বাচনী প্রচারকাজ চালাতে পারবো না। আমি কেন আমার জনগণের কাছে যেতে পারব না আমার প্রচারকাজ চালানোর জন্য। কেন প্রতিটি পদে পদে আমাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে, আমাকে মামলা-মোকদ্দমা, হুমকি-ধমকি, ভয়ভীতি, গালিগালাজ করা হচ্ছে’, বলেন হাসিনা আহমদ।
এসব ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান বিএনপির প্রার্থী। জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ এসব হামলা-মামলা করে বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের ভোট থেকে দূরে রাখার অপচেষ্টা করছে। প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকায় এসে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাবে না বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন হাসিনা আহমদ।