নৌকা-ধানের শীষ ছাড়াই ভোট
সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনে দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী নেই। মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্ট থেকে প্রার্থী থাকলেও এবারই প্রথম নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীক ছাড়া নির্বাচন হতে যাচ্ছে এখানে। তবে বড় দুই দল না থাকায় নির্বাচনী আমেজ কিংবা উৎসবের পরিবেশ নেই বলে জানিয়েছেন ভোটাররা।
দলের নেতাকর্মী কিংবা সমর্থকরাও নির্বাচন থেকে সরে থাকছেন। তাঁরা বলছেন, এ আসনে যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, এর মধ্যে ছয়জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আর তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এর মধ্যে স্বতন্ত্র দুজন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও আরেকজন বিএনপি বিদ্রোহী।
এ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ছিলেন মনোনয়নপ্রত্যাশী। কিন্তু মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে ধানের শীষ প্রতীক দেওয়া হয়েছিল বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নিখোঁজ নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনাকে। তিনি প্রতীক পেয়ে নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগও করেন। কিন্তু আইনি জটিলতায় গত ১৮ ডিসেম্বর ইয়াহইয়া চৌধুরীর দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়েন লুনা। ছিটকে পড়ে ধানের শীষ প্রতীকও।
এদিকে সিলেট-২ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে এ আসনে নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খানকে। তিনি উদীয়মান সূর্য প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
এখন পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকা প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির ইয়াহইয়া চৌধুরী (লাঙ্গল), খেলাফত মজলিসের মুহাম্মদ মুনতাছির আলী (দেয়াল ঘড়ি), গণফোরামের মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আমির উদ্দিন (হাতপাখা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. মনোয়ার হোসাইন (আম), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফের মো. মোশাহিদ খান (টেলিভিশন)। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলেন মুহিবুর রহমান (ডাব), ড. এনামুল হক সরদার (সিংহ) ও আবদুর রব মল্লিক (কার)।
বড় দুই দলের প্রার্থী না থাকায় উৎসববিহীন লড়াইয়ের অপেক্ষায় আছে আসনটি। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সমর্থন পেলে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী ও গণফোরামের মোকাব্বির খান এগিয়ে থাকবেন, এমনটিই ধারণা করা হচ্ছে। তারপরও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. এনামুল হক সরদারকে হিসাবে রাখছেন ভোটাররা। পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে ওসমানীনগর উপজেলায় তিনি ভালো ভোট পাবেন বলে ধারণা করছেন তাঁর সমর্থকরা।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, ঐক্যফ্রন্ট থেকে গণফোরামের মোকাব্বির খানকে মনোনীত করা হয়েছে। তাই দলীয় নেতাকর্মীদের তাঁর পক্ষে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। ধরপাকড়ের কারণে নেতাকর্মীরা বাসাবাড়িতে থাকতে পারেন না বলে তিনি অভিযোগ করেন। সে জন্য নির্বাচনী প্রচারে তাঁরা থাকতে পারছেন না বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের জেলা সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিশ্বনাথ-ওসমানীনগরে মহাজোট থেকে ইয়াহইয়া চৌধুরী নির্বাচন করছেন। আওয়ামী লীগ তাঁকে সহযোগিতা করছে। দলের নেতাকর্মীদেরও সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া আছে। এ আসনে উন্নয়ন ও সুশাসনের জন্য আওয়ামী লীগ খুবই জনপ্রিয়। এ ছাড়া তিনি এ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। সেই সময় থেকে সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগ খুবই শক্তিশালী। নৌকা প্রতীক না থাকলেও মহাজোটের প্রার্থীই এখানে বিজয়ী হবে।