চিকিৎসক ব্যক্তিগত চেম্বারে, হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় মো. বাবুল হোসেন (৪০) নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি হৃদরোগে ভুগছিলেন। ঘটনার সময় হাসপাতালে দায়িত্বরত কনসালটেন্ট কার্ডিওলোজি ভবাণী প্রসাদ রায় উপস্থিত ছিলেন না। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত চেম্বার দক্ষিণ তেমুহনী এলাকায় ছিলেন। তাঁর অনুপস্থিতির কারণেই রোগী মারা যান বলে স্বজনদের অভিযোগ।
আজ সোমবার দুপুরে সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অন্য রোগী ও আত্মীয় স্বজনরা ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ করেন।
নিহত বাবুল হোসেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড সাহাপুর এলাকার কালামিয়ার ছেলে।
জানা গেছে, ভবানী প্রসাদ তাঁর ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখেন। সেখান থেকে ফোন পেলে (অনকল) রোগী দেখার জন্য সদর হাসপাতাল থেকে চলে যান।
স্বজনরা জানান, বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাহাপুর এলাকার মো. বাবুল হোসেনের বুকে ব্যথা অনুভব করলে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক (মেডিসিন) সালাহ উদ্দিনকে দেখালে রোগীর কার্ডিওলোজির সমস্যা ধরা পড়ে। পরে রোগীকে তিনি ভবাণী প্রসাদ রায়ের কাছে পাঠান। কিন্তু হাসপাতালে ভবাণী প্রসাদ উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে অন্যকেউ তাঁর মোবাইল ফোনটি রিসিভ করে জানান, ভবাণী প্রসাদ সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ব্যস্ত রয়েছেন।
পরে লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন মোস্তফা খালেদ আহমেদকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়। এর কিছুক্ষণ পর ওই চিকিৎসক হাসপাতাল আসেন। কিন্ত এর আগেই রোগী মারা যান। চিকিৎসার অবহেলায় ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে গণমাধ্যমকর্মীদের অভিযোগ করেন স্বজনরা। রোগীর মৃত্যুতে স্বজনরা হাসপাতাল এলাকা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।
এদিকে খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা ভবাণী প্রসাদের দক্ষিণ তেমুহনী এলাকার ব্যক্তিগত চেম্বারে গেলে তাঁর দেখা মেলে। এ সময় তিনি অন্য রোগীকে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। তবে ক্যামেরার সামনে তিনি কোনো কথা বলেননি।
সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) জয়নাল আবেদিন বলেন, রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী রেফার করা হয়েছিল। কিন্তু নোয়াখালী নেওয়ার আগেই তিনি মারা যান।
জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন মোস্তফা খালেদ আহমেদ বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। কোনো মৃত্যুই আমাদের কাম্য নয়। ঘটনার সময় দায়িত্বরত চিকিৎসককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।