পুরো সাংবাদিক সমাজই লাঞ্ছিত হয়েছে
সম্প্রতি রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে আরটিভির দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনাকে পুরো সাংবাদিক সমাজের লাঞ্ছনা হিসেবে অভিহিত করেছেন সাংবাদিক নেতারা।
আজ বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘আমরা সংবাদকর্মী’র ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ মন্তব্য করেন সাংবাদিক নেতারা।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিকার না পাওয়ার কারণেই একের পর এক হামলা হচ্ছে। পুলিশসহ সন্ত্রাসীকর্তৃক সাংবাদিক সমাজ বারবার নিগৃহীত হচ্ছে।’
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সাধারণ সম্পাদক দীপু সারোয়ার বলেন, মুগদা হাসপাতালে এর আগে পাঁচ দিন বিদ্যুৎ ছিল না, পানি ছিল না। এ অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে একটা হাসপাতাল কীভাবে চলে?’
‘সরকারি হাসপাতালে গরিব রোগীরা চিকিৎসা নিতে যান। সেখানে যদি অনিয়ম হয় তাহলে মানুষের মৌলিক অধিকার কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে? সেই হাসপাতালের অনিয়ম তুলে ধরা সাংবাদিকদের কাজ।’ সে কাজ করতে কেন বা সাংবাদিককে বাধা দেওয়া বা হামলা করা হবে প্রশ্ন তোলেন দীপু সারোয়ার।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, ‘সাংবাদিকদের যেভাবে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তাতে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সুযোগ কোথায়! সাংবাদিক নেতারা আজ সরকার ও রাজনৈতিক দলের পক্ষে অবস্থান নেন। কিন্তু সাংবাদিক সমাজে কেউ লাঞ্ছিত হলে তার পক্ষ নেন না। এসব কারণেই এমন হামলা হচ্ছে।’
স্বাধীন সাংবাদিকতা কঠিন হয়ে গেছে মন্তব্য করে ডিআরইউর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোরসালিন নোমানী বলেন, সাধারণ মানুষের কথা বলতে গেলে কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। অনিয়ম না থাকলে কেন কেউ বাধা দেবে বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সাংবাদিকের ওপর হামলার ওই ঘটনায় মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. আমিন আহমেদ খান ও হামলাকারী দুই ওয়ার্ডবয়কে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান সাংবাদিক নেতারা।
মানববন্ধন থেকে আরো জানানো হয়, এ হামলার বিচার নিশ্চিত করতে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন প্রথমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ জানাবে। তাতে কাজ না হলে পরবর্তী সময়ে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী সদস্য শেখ মামুন, ডিআরইউর কার্যনির্বাহী সদস্য মাকসুদুল হাসান প্রমুখ মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।
গত মঙ্গলবার মুগদা জেনারেল হাসপাতালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আরটিভির সাংবাদিক সোহেল রানা ও ক্যামেরাপারসন নাজমুল হোসেন সায়মনের ওপর হামলা হয়। দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য সংগ্রহের সময় তাঁদের ওপর হামলা চালায় হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় আসিফ ও সায়মন।