পুলিশকে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
মাদক নির্মূলের পাশাপাশি নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে পুলিশকে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে দেশের নিরীহ জনগণকে কোনো ধরনের হয়রানি না করতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৯’- এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করায় পুলিশ বাহিনীর প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গত ১০ বছরে পুলিশের জনবল ধাপে ধাপে প্রায় ৮০ হাজার বৃদ্ধি করা হয়েছে। পুলিশকে বিশেষ প্রশিক্ষণ, যানবাহন, প্রয়োজনীয় অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। সুপার নিউমারারি পদ সৃষ্টির মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের পদোন্নতি প্রাপ্তির জটিলতা নিরসনেও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের মনে রাখতে হবে দেশের নিরীহ জনগণকে কোনো ধরনের হয়রানি করা যাবে না। বরং তারা হয়রানির শিকার হলে, বিপদে পড়লে তাদের সহযোগিতা করুন।’
সাধারণ জনগণকে যেকোনো ধরনের হয়রানি থেকে রক্ষা করা পুলিশের দায়িত্ব উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণ এটাই আপনাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের আস্থা অর্জনে ও জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী হতে প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে সততা ও আন্তরিকতার সাথে তার দায়িত্ব পালন করতে হবে। আপনাদের থেকে এটাই আমরা চাই।’
দেশের সাধারণ মানুষের ভাগোন্নয়নে ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় থাকা প্রয়োজন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশটা আমাদের, এখানে শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাদক নির্মূলে যে অভিযান আমাদের চলমান, এটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। সেই সাথে সাথে নিরাপদ সড়ক, এই নিরাপদ সড়ক মানুষের মাঝে যেটা জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। কারণ আমাদের যারা পথচারী, তাদের মাঝেই সচেতনতার অভাব আছে। তারা যখন তখন যেখান থেকে ছুটে গিয়ে, রাস্তা পার হতে গিয়ে তারা দুর্ঘটনার শিকার হয়। এই জনসচেতনতা যেমন প্রয়োজন, স্কুলপর্যায় থেকে ট্রাফিক রুল সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। সেই সাথে সাথে নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে আমরা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছি সেগুলো যথাযথভাবে পালন করা, এটা একান্তভাবে প্রয়োজন।’
এর আগে ‘পুলিশ জনতা ঐক্য গড়ি, মাদক-জঙ্গি নির্মূল করি’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে সারাদেশে শুরু হওয়া পাঁচ দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ‘অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ’ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী এ বছর পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ৩৪৯ জন সদস্যের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। গত ২৯ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুসারে এবার ৪০ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)’, ৬২ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)’ এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ১০৪ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা’ এবং ১৪৩ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা’ দেওয়া হয়। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে পুলিশ সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।