কিশোরগঞ্জে হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি, দুজনের যাবজ্জীবন
কিশোরগঞ্জে আলোচিত আক্তারুজ্জামান হত্যার দায়ে এক ব্যক্তির ফাঁসি ও দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেক আসামিকে পাঁচ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
আজ বুধবার দুপুরে দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আবদুর রহিম এ রায় দেন। জামিনে গিয়ে পলাতক তিন আসামির সবাই এ সময় অনুপস্থিত ছিলেন।
ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া আসামির নাম মোয়াজ্জেম মজু। যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া দুই আসামি হলেন মজুর ছোট ভাই মোবারক ও চাচাত ভাই আরমান। এ ছাড়া বিচার চলাকালে মামলার এজাহারভুক্ত অপর আসামি মজুর বড় ভাই আজিজুল ইসলাম আরজুর মৃত্যুর ফলে তাঁকে বিচার থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মামলার বাদী ও চার আসামি সবাই জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার মান্দারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ও পরস্পরের নিকটাত্মীয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মান্দারকান্দি গ্রামের মো. আছির উদ্দিনের ছেলে আক্তারুজ্জামানের সঙ্গে তাঁর মামাতো বোন সেলিনা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একপর্যায়ে গোপনে সেলিনাকে বিয়ে করে পৈতৃক বাড়িতেই তাঁর সঙ্গে সংসার শুরু করেন আক্তারুজ্জামান। সে সময় তাঁদের একটি পুত্র সন্তান হয়।
এরই মধ্যে ২০১২ সালের ২৬ জুলাই স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্বের জেরে বাবার বাড়ি চলে যান সেলিনা। পরদিন স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে শ্বশুরবাড়ি যান আক্তারুজ্জামান। সে সময় স্ত্রীর আপন তিন ভাই ও তাঁর চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে কাটাকাটি হয় আক্তারুজ্জামানের। এরই একপর্যায়ে সেলিনার ভাইরা মারধর শুরু করলে পালানোর চেষ্টা করেন আক্তারুজ্জামান। কিন্তু তাঁকে ধাওয়া দিয়ে আটকে ধারালো অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন সেলিনার ভাইয়েরা।
ওই দিন সন্ধ্যায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় আক্তারুজ্জামানকে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনায় নিহত আক্তারুজ্জমানের বড় ভাই মো. রুহুল আমিন বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে পাকুন্দিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. গোলাম মোস্তফা ২০১৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি হুমায়ুন কবীর ও পলাতক থাকায় আসামিপক্ষে রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত আইনজীবী লুৎফুর রশীদ রানা মামলাটি পরিচালনা করেন।