সারা দেশে যথাযথ মর্যাদায় শহীদ দিবস পালিত
সারা দেশে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একুশের প্রথম প্রহরে জেলায় জেলায় শহীদ মিনারে গিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে স্থানীয় প্রশাসন।
ঢাকার বাইরে থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
মুহাম্মদ আবু তৈয়ব, খুলনা : রাত ১২টা ১ মিনিটে খুলনার হাদিস পার্কের শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে খুলনায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। শহীদ মিনারের বেদীতে প্রথম পুষ্পমাল্য অর্পণ করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। পরে খুলনা সিটি করপোরেশনের পক্ষে মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মিজানুর রহমান মিজানের নেতৃত্বে অঙ্গসংগঠন, মহানগর বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামনের নেতৃত্বে বিএনপি ও তাঁর অঙ্গ সংগঠনের নেতারা শহীদদের সম্মান জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, জেলা পুলিশ প্রশাসন, খুলনা প্রেসক্লাব, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। মধ্যরাতের নীরবতা ছাড়িয়ে হাজারো মানুষের স্রোত ছিল খুলনা হাদিস পার্কের শহীদ মিনারমুখী।
নাফিজ আশরাফ, নারায়ণগঞ্জ : জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে।
রাত ১২টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে নগরীর চাষাড়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া ও জেলা পুলিশ সুপার হারুন আর রশিদ।
এরপর একে একে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ। একই সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও ভাষা শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
আইয়ুব আলী, ময়মনসিংহ : আজ রাত ১২টা ১মিনিটে নগরীর টাউন হল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহম্মেদ এমপি।
পরে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিভাগীয় কমিশনার মাহমুদ হাসান, পুলিশের ময়মনসিংহ রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) নিবাস চন্দ্র মাঝি, সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ইকরামুলক হক টিটু, জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান, পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন, গণমাধ্যমকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রাজনৈতিক নেতা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া ময়মনসিংহের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এদিকে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে সরকারি, বেসরকারি ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সাবিনা ইয়াসমিন শ্যামলী, কুষ্টিয়া : দিবসটি উপলক্ষে কুষ্টিয়া কালেক্টর চত্বরের শহীদ মিনারে রাত ১২টা ১ মিনিটে জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন ও পুলিশ সুপার এস এম তানভির আরাফাত পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে কুষ্টিয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা আওয়ামী লীগ, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব (কেপিসি), সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ ছাড়া জেলার সব উপজেলায় যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়।
সঞ্জিব দাস, ফরিদপুর : রাত থেকেই ফুলে ফুলে ভরে ওঠে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। জেলা শহরের মতো অন্য নয় উপজেলাতেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়।
ফরিদপুরের এনডিসি হাসান হাফিজুর রহমান জানান, ভাষা শহীদদের প্রতি পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, প্রভাত ফেরি, আলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন, স্বেচ্ছায় রক্তদান আর গানের মধ্য দিয়ে আমরা অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছি।
রাত ১২টা এক মিনিটে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, ফরিদপুর প্রেসক্লাব, বিএনপি, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনগুলো।
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার সকালে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি প্রভাতফেরি বের করা হয়, যা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে অবস্থিত শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফরিদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
শিহাব উদ্দিন বিপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : একুশের প্রথম প্রহরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান ও পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন খান। পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। এ ছাড়া জেলা পুলিশের একটি দল শহীদদের সম্মানে রাষ্ট্রীয় সালাম জানান।
শাহজাহান সিরাজ মিঠু, জয়পুরহাট : দিবসটি উপলক্ষে রাত ১২টা ১ মিনিটে জয়পুরহাট শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু। পরে একে একে জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, জেলা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, জেলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে।
আবু তাহের মুহাম্মদ, খাগড়াছড়ি : প্রথমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত জেলা কমান্ডার ও জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একুশের ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর শরণার্থী পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, তিন পার্বত্য জেলা থেকে নির্বাচিত সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদুল হক, বিশেষায়িত আর্মড পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি আওরঙ্গজেব মাহবুব, পুলিশ সুপার মো. আহমারউজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সরকারি দপ্তর, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সকাল ৭টায় খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে প্রভাতফেরি বের করা হয়।
রেজ আন উল বাসার তাপস, মেহেরপুর : একুশের প্রথম প্রহরে মেহেরপুর শহরের শহীদ সামসুজ্জোহা পার্কের শহীদ মিনারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক আতাউল গনি ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান।
এরপর জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম রসুল, জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আব্দুস সামাদ বাবলু, আব্দুল হালিম ও যুগ্মসম্পাদক অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম শাহীন শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।
এরপর একে একে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এ ছাড়া আলোচনা সভা, রচনা প্রতিযোগিতা, একুশ সংক্রান্ত গান, কবিতা, চিত্রাঙ্কন ও হাতের লেখা প্রতিযোগিতাসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আবু হোসাইন সুমন, মোংলা : একুশের প্রথম প্রহরে মোংলার পৌর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার।
এরপর একে একে শ্রদ্ধা জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম, মোংলা-রামপাল সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. খায়রুল আলম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার শেখ আবদুর রহমান, পৌর মেয়র আলহাজ মো. জুলফিকার আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুনীল কুমার বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ শেখ আবদুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আবদুর রহমান, মোংলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম সরোয়ার, মোংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এইচ এম দুলালসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।
ভজন দাস, নেত্রকোনা : রাত ১২টা ১ মিনিটে পৌর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলো প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে দিবসটির প্রথম প্রহরের কার্যক্রমের সূচনা করেন নেত্রকোনা পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম খান।
এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু, জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম ও পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এ ছাড়া জেলা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, জেলা বিএনপিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রভাতফেরি করে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
মো. জালাল উদ্দিন, কুমিল্লা : রাত ১২টা ১ মিনিটে দিবসের প্রথম প্রহরে কুমিল্লা টাউন হল মাঠের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
প্রথমে কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর ও পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে একে একে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে দিনব্যাপী আলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।
কাজী রাশেদ, চান্দিনা : রাত ১২টা ১ মিনিটে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা পরিষদ চত্বরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চান্দিনার ইউএনও এস এম জাকারিয়া। এরপর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তপন বকসী, পৌর মেয়র মো. মফিজুল ইসলামসহ আরো অনেকে। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সর্বস্তরের মানুষ শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
শফিকুল ইসলাম শফিক, মাগুরা : রাত ১২টা ১ মিনিটে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। তারই অংশ হিসেবে সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রভাতফেরির আয়োজন করা হয়। সারা শহর প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে শেষ হয় প্রভাতফেরিটি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, জেলা প্রশাসক মো. আলী আকবর, পুলিশ সুপার খান মোহম্মদ রেজোয়ান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তানজেল হোসেন খান, সাধারণ সম্পাদক পংকজ কুন্ডু প্রমুখ। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দলের নেতাকর্মীরা, বীর মুক্তিযোদ্ধারা ও স্কুল-কলেজসহ সর্বস্তরের মানুষ প্রভাতফেরিতে অংশ নেয়।
দিবসটি উপলক্ষে দিনব্যাপী রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শুদ্ধ বানান লেখা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, রক্তদান কর্মসূচিসহ নানা আয়োজন।
এম মুনীর চৌধুরী, নড়াইল : একুশের প্রথম প্রহরে শহরের শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা। এ সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইয়ারুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কাজী মাহাবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এরপর পর্যায়ক্রমে শহীদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, নড়াইল পৌরসভার মেয়র মো. জাহাঙ্গীর বিশ্বাস প্রমুখ।
এ ছাড়া জেলা যুবলীগ, জেলা ছাত্রলীগ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জেলা মহিলা যুবলীগ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিট, নড়াইল প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিল।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুন্দর হাতের লেখা, অমর একুশে সংশ্লিষ্ট চিত্রাঙ্কন, কবিতা আবৃত্তি, একুশ ভিত্তিক উন্মুক্ত কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এসব কর্মসূচি পালিত হয়। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী এসব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে নড়াইলে শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সকালে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের সহযোগী সংগঠন ‘টিম তারুণ্য ১০০’ এর উদ্যোগে নড়াইল শহরের বিভিন্ন এলাকায় এ ব্যতিক্রমী অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে শহরের ডাস্টবিনে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়।
রিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেন জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পুলিশ সুপারের সহধর্মিণী অধ্যাপক নাহিদা চৌধুরী সুমি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইয়ারুল ইসলাম, ‘টিম তারুণ্য ১০০’ এর সমন্বয়ক রাসেল বিল্লাহসহ সংগঠনটির অন্য কর্মীরা।
অন্যদিকে ‘অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো’ এই স্লোগান নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের কুড়িরডোব মাঠে ভাষা শহীদদের স্মরণে প্রজ্বালন করা হবে এক লাখ মঙ্গল প্রদীপ ও মোমবাতি। নড়াইল একুশের আলোর আয়োজনে একুশের ভাষা শহীদদের স্মরণে সন্ধ্যায় এ মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন করা হবে।
সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে একুশের সন্ধ্যায় শুরু হবে এক লাখ মঙ্গল প্রদীপ ও মোমবাতি প্রজ্বালন।
শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতি সৌধ, বাংলা বর্ণমালা, আলপনাসহ গ্রাম-বাংলার নানা ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে। সেই সঙ্গে ভাষা দিবসের ৬৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ৬৮টি ফানুস উড়াবেন।
এ ব্যাপারে নড়াইল একুশের আলোর সভাপতি অধ্যাপক মুন্সী হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতামুক্ত সুখী সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্নকে ধারণ করে প্রতিবছর আয়োজন করা হয় এই অনুষ্ঠানের। এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘর মুক্তির আলোয় ভরে উঠুক, এ কামনা আমাদের।’
প্রতি বছরের মতো এবারও নড়াইলবাসী ও ঢাকাসহ নড়াইলের পাশের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার দর্শনার্থী এ মনোরম দৃশ্য উপভোগ করবেন বলে আশা করেন তিনি।
শরীফুল ইসলাম ইন্না, সিরাজগঞ্জ : দিবসের প্রথম প্রহরে সিরাজগঞ্জের মুক্তির সোপানে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সিরাজগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ। প্রথমে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোস্তফা কামাল খান, অ্যাডভোকেট বিমল কুমার দাস, অ্যাডভোকেট কে এম হোসেন আলী হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর সেলিম আহমেদ প্রমুখ।
পরে একে একে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকা, পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী ও সিরাজগঞ্জ পৌরসভার মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাব, উদীচী নাট্যগোষ্ঠী, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, ছাত্র, শ্রমিক, কৃষকসহ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা জানালে ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় শহীদ মিনারের বেদী।
সকাল ১০টায় পৌর শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় জেলা বিএনপির সহসভাপতি মজিবুর রহমান লেবু, আজিজুর রহমান দুলাল, নাজমুল হাসান রানা, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, যুগ্মসম্পাদক হারুন অর রশিদ খান হাসান ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান উপস্থিত ছিলেন।
হালিম খান, নাটোর : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে নাটোরে আয়োজন করা হয় ব্যতিক্রমী পথ বইমেলা। নাটোরের ৪০ জন লেখকের লেখা নানা ধরনের বই নিয়ে স্থানীয় একটি দৈনিক আয়োজন করে এ বইমেলার। সকালে নাটোর প্রেসক্লাবের সামনের সড়কের পাশে বইমেলার উদ্বোধন করেন কবি বদরে মনিরের মা সাবেক শিক্ষা কর্মকর্তা হামিদা বানু।
দিনব্যাপী এ মেলা উদ্বোধনের পর থেকেই কবি-সাহিত্যিক, পাঠক, ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। কবিতা আবৃত্তি ও বাঁশির সুরে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশনসহ অনুষ্ঠিত হয় সাহিত্যের নানা উপস্থাপনা।
ওছমান হারুন মাহমুদ, ফেনী : একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে ফেনী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী। এরপর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা, ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটি, ফেনী প্রেসক্লাব, রাজনৈতিক দল ও তাদের অঙ্গ সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
ভোরে স্কুলের ছাত্রছাত্রীসহ বিভিন্ন সংগঠন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
ভাষা শহীদ আবদুস সালামের গ্রামের বাড়ি দাগনভূঞা উপজেলার সালামনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে শহীদ সালামের পরিবার ও জেলা প্রশাসন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সকাল ১০টায় ফেনী শহীদ মিনার সংলগ্ন রাজাঝির দীঘির দক্ষিণ-পশ্চিম পাড়ে সাত দিনব্যাপী একুশের বইমেলা উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া বিভিন্ন সংগঠন পৃথক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শহীদ দিবস পালন করছে।
সুভাষ চৌধুরী, সাতক্ষীরা : একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সারাদিনের কর্মসূচি। সকালে প্রভাতফেরি ও পরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন, কবিতা আবৃত্তি ও সুন্দর হাতের লেখার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
দিনটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা এবং স্কুল-কলেজ ও প্রেসক্লাব নানা কর্মসূচি পালন করে।
কাকন রেজা, শেরপুর : শেরপুর জেলা শহরের চকবাজারস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসটির সূচনা করা হয়। রাতের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক। এরপর জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব, পুলিশের পক্ষে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম, শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে একে একে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, শেরপুর প্রেসক্লাব ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শহীদদের শ্রদ্ধা জানায়।
সকালে প্রভাতফেরি করেছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। এ ছাড়া সরকারি ও বেসরকারিভাবে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মিজানুর রহমান, ঝিনাইদহ : রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় মহান ভাষা শহীদদের প্রতি। জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সিভিল সার্জন অফিস, ঝিনাইদহ জেলা প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, রাজনৈতিক দলসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।
এ সময় শহীদ মিনার চত্বরে হাজারো মানুষের ঢল নামে। এ ছাড়া প্রভাতফেরিসহ দিনব্যাপী আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে দিসবটি।