‘আমি মর্গ থেকে বলছি, লাশ নিয়ে যান’
কাজী এনামুল হক ঢাকা সিটি কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে গিয়েছিলেন পুরান ঢাকার মদিনা ডেন্টাল ক্লিনিকে দাঁতের চিকিৎসকের কাছে। চিকিৎসক এনামুলের দাঁত পরীক্ষা করছিলেন। এমন অবস্থায় আগুনে পুড়ে সেখানে উপস্থিত সবাই মারা গেছেন।
রাত থেকে কাজী এনামুল হকের খোঁজ পাচ্ছিলেন না তাঁর পরিবার। মুঠোফোনে কল দিলেও কেউ ধরছিলেন না। সারারাত খোঁজ না পেয়ে রাত কেটে গেল পরিবারের। আজ সকাল ৮টার দিকে এনামুলের ফোনে ফোন দিলে একজন ফোনটি ধরেন।
তাঁর বড় ভাই কাজী আমির হোসেন ফোন দিয়েছিলেন। ফোনটি রিসিভ করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে একজন। কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন কাজী আমির হোসেন। এনটিভি অনলানকে বলেন, ‘রাত ১০টার পর থেকে মোবাইলে ফোন দিয়েই যাচ্ছি, কেউ ধরেনি। সকাল ৮টার সময় একজন ফোন ধরে বললেন, আমি মর্গ থেকে বলছি, আপনারা লাশ নিয়ে যান। আপনার ভাই, আগুনে পুড়ে মারা গেছেন। আপনার ভাইয়ের প্যান্টের পকেটে ফোনটি ছিল। দ্রুত আসেন এখানে। শনাক্ত করে লাশ নিয়ে যান।’
কাজী আমির হোসেন আরো বলেন, সিটি কলেজে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়ত এনামুল। গতকাল সাড়ে ৯টার দিকে দাঁতের চিকিৎসায় চকবাজারের মদিনা ডেন্টাল ক্লিনিকে গিয়েছিলেন। সেখানেই এনামুল ও চিকিৎসকসহ উপস্থিত সবাই আগুনে পুড়ে প্রাণ হারান।’
এনামুল চকবাজারের একটি মেসে থেকে লেখাপড়া করতেন।
কাজী আমির হোসেন আরো বলেন, ‘সেই সকালে এখানে এসেছি। লাশ কখন পাবো জানি না। আপনারা যদি পারেন একটু সহায়তা করুন। যদি দ্রুত লাশ নিয়ে বাড়িতে যেতে পারি। ভাইটার আমার শুধু মুখ পুড়ে গেছে। বাকি সারা শরীর ভালো আছে।’
পটুয়াখালীরর মির্জাগঞ্জ উপজেলার রামপুর গ্রামের কাজী মতলেবের ছোট ছেলে কাজী এনামুল হক। তিনি রাজধানীর সিটি কলেজে এমবিএ করছিলেন। এনামুলের বড় ভাই লঞ্চে চাকরি করেন। মৃত্যুর সংবাদ শুনে পটুয়াখালী থেকে পরিবারের অনেকেই চলে এসেছে বলে জানাচ্ছিলেন কাজী আমির হোসেন।