সৌদি কূটনীতিক খালাফ হত্যায় মামুনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
সৌদি আরবের দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আল আলী হত্যা মামলার আসামি সাইফুল ইসলাম মামুনের মৃত্যুদণ্ড গতকাল রোববার রাতে কার্যকর করা হয়েছে। রাত ১০টা ১ মিনিটে তাঁর দণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয় বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার মো. শাহজাহান আহম্মেদ।
পরে রাতেই মামুনের স্বজনরা লাশ গ্রহণ করে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে মিরপুর ১৪ নম্বরের বাসায় নিয়ে যান। সেখানেই তাঁকে দাফন করা হবে। এর আগে দুপুরে পরিবারের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ করেন।
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার বিকাশ রায়হান জানান, ফাঁসি কার্যকরের সময় সাইফুল ইসলাম মামুন বেশ স্বাভাবিক ছিলেন। জল্লাদ রাজুর নেতৃত্বে কয়েকজন এটি কার্যকর করেন।
এ সময় গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা হাকিম মশিউর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ মঞ্জুরুল হক, হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার মো. শাহজাহান আহম্মেদ, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের একজন প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফাঁসি কার্যকরের পর কারাবিধি অনুযায়ী সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাইফুল ইসলাম মামুনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কারাফটক থেকে মামুনের লাশ তাঁর বড় ভাই ইয়াসিন গ্রহণ করেন। এ সময় মামুনের মা আলেয়া বেগম, মামা সোহাগসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর আসামি সাইফুল ইসলাম মামুনের ফাঁসির রায় কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে মৃত্যুদণ্ডের রায় হওয়ার পর ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সাইফুল ইসলাম মামুনকে গাজীপুরে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এর পর থেকেই মামুন এ কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি আছেন।
জানা যায়, ২০১২ সালের ৫ মার্চ ঢাকার গুলশানে কূটনৈতিক এলাকায় সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আল আলীকে গুলি করা হয়। পরের দিন ভোরে তিনি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করে। আদালত ওই মামলায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। পরবর্তী সময়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম মামুনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় প্রদান করেন। এ ছাড়া আদালত অপর তিনজনের মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান এবং একজনকে খালাস দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত সাইফুল ইসলাম মামুন বাগেরহাটের শরণখোলা থানার মধ্য খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা।