গোপালগঞ্জে নেই নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী!
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ আগামী ২৪শে মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে গোপালগঞ্জ জেলার একটি উপজেলাতেও নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন না কোনো চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। জেলার মোট পাঁচটি উপজেলায় সব মিলিয়ে ভোটের মাঠে লড়ছেন ৬৯জন প্রার্থী।
আজ শুক্রবার বিকেলে গোপালগঞ্জের দুজন রিটার্নিং কর্মকর্তা এনটিভি অনলাইনকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনটি উপজেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা শান্তি মনি চাকমা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘পুরো গোপালগঞ্জ জেলায় মোট পাঁচটি উপজেলা আছে। আমি গোপালগঞ্জের তিনটি উপজেলার (সদর, কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়া) রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এই তিন উপজেলায় মোট ৩৯জন প্রার্থীকে আজ বেলা ১১টার সময় প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এদের ভেতরে সদর উপজেলায় মাত্র একজনকে লাঙ্গল প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘তিন উপজেলায় মোট ১০জন উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী, ১৮ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এবং ১১জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছি। এর ভেতরে এই তিনটি উপজেলার একটিতেও নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।’
গোপালগঞ্জের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং মুকসুদপুর এবং কাশিয়ানী উপজেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা ওয়াহেদুজ্জামান মুন্সি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি এই দুটি উপজেলার রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এখানে মোট ৩০ জন প্রার্থীর ভেতরে একজনকেও নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেইনি। সবাইকে আজ বেলা ১১টার সময় প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কারণ দল থেকে কাউকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়নি।’
তিনি আরো বলেন, ‘কেবল মুকসুদপুর উপজেলায় একজন জাকের পার্টির প্রার্থী ছাড়া বাকি ২৯জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। দুই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ১০জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ১০জন আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ১০জন।’
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফারুক আহমেদ (জাপানি ফারুক) এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের গোপালগঞ্জের পাঁচটি উপজেলার সব প্রার্থীকেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। শেষমেশ যিনি যোগ্য বা জনপ্রিয় প্রার্থী তিনিই জয় লাভ করবেন। সবাইকে উন্মুক্ত করে প্রধানমন্ত্রীর খুবই ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে আমি মনে করছি। কাশিয়ানী উপজেলাতে আমার জনপ্রিয়তা সব চেয়ে বেশি। সৃষ্টিকর্তা আমাকে বাঁচিয়ে রাখলে আমিই জয় পাব।’
মুকসুদপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী মহিউদ্দিন আহমেদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছে। এতে করে লড়াই হবে হাড্ডা-হাড্ডি। পাশ কিংবা ফেল যেই করুক না কেন নির্বাচনটা নির্বাচনের মতোই হোক। এটা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত। তিনি সব বুঝে-শুনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে আমার মনে হয়।’
গত ৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ দ্বিতীয় ধাপের তফসিল ঘোষণা করেন। এতে গোপালগঞ্জ সদর, টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া, কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর উপজেলাসহ মোট ১২৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ ১৮ মার্চ সম্পন্নের কথা বলা হয়।
তবে এরপর গোপালগঞ্জের পাঁচ উপজেলার ভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) একটি নির্দেশনা জারি করেন। নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার নির্বাচনের বর্তমান তফসিল (দ্বিতীয় ধাপ) স্থগিত করে তৃতীয় ধাপে অন্তর্ভুক্ত করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ১২৭ উপজেলায় আগামী ২৪শে মার্চ ভোটগ্রহণ করা হবে।