চট্টগ্রামে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভে পুলিশের লাঠিপেটা
চট্টগ্রামের বায়েজিদ বালুছড়া এলাকায় এক পোশাক শ্রমিকের রহস্যজনক মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন অন্য শ্রমিকরা। এ সময় পুলিশের লাঠিপেটায় ১৫ শ্রমিক আহত হয়েছে।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়কের বায়েজিদ বালুছড়া ফোর এইচ অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, গত শনিবার ফোর এইচ গ্রুপের বালুছড়া কারখানার অপারেটর হাজেরা খাতুন রহস্যজনকভাবে মারা যায়।
শ্রমিকদের দাবি, কারখানার ফ্লোর ইনচার্জ ও সুপারভাইজারদের অত্যাচারে হাজেরা খাতুন মারা গেছেন।
ফোর এইচ অ্যাপারেলস কারখানার অপারেটর সালমা আক্তার জানান, এ কারখানায় শ্রমিকদের প্রায় সময় নির্যাতন করে সুপারভাইজার, ইনচার্জ ও পিএম কর্মকর্তারা। এখানে কাজের কোনো পরিবেশ নেই। কর্মকর্তাদের নির্যাতনে হাজেরা মারা গেছেন। সবার ছুটি হয়ে গেলেও হাজেরাকে ওই দিন রাত দেড়টা পর্যন্ত আটকে রাখে। রাত সাড়ে ১১টায় সবার ছুটি হয়ে যায়।
অপারেটর নাজিয়া জানান, হাজেরাকে নির্যাতন করে মারা হয়েছে। ঘটনার তিনদিন পরও কোনো বিচার হয়নি। এ ঘটনার প্রতিবাদ ও নিরাপদ কারখানার দাবিতে বুধবার শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করলে কারখানা ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। শ্রমিকের বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ তাদের বেড়ধক লাঠিপেটা করে।
বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান জানান, ফোর এইচ গ্রুপের শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছে এমন খবরে তারা সেখানে যায়। শ্রমিকরা চট্টগ্রাম- হাটহাজারী সড়ক অবরোধ করলে কয়েক ঘণ্টার জন্য দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এ সময় পুলিশের বেড়ধক পিটুনিতে গুরুতর আহত হয় শ্রমিকরা। আহত শ্রমিকদের মধ্যে ১০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন পাখি আকতার, রুবি আকতার, আনোয়ারা বেগম, রেজাউল করিম, মনি আকতার, সুলতানা আকতার, রুমা আকতার, মোহছেনা বেগম, মরিয়ম বেগম ও মো. নাছিম।
এদিকে ঘটনার ছবি তুলতে গিয়ে পুলিশ হাতে লাঞ্ছিত হন প্রথম আলোর সাংবাদিক জুয়েল শীল। পুলিশের লাঠিপেটার ছবি নেওয়ার সময় পুলিশের এএসআই শরিফুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগীরা ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ছবি মুছে দেওয়ার চেষ্টা চালায় ও তাঁকে লাঞ্ছিত করেন।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম শাখা এ ঘটনায় হামলাকারী এএসআই শরিফুলসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে।
ফোর এইচ অ্যাপারেলস কারখানার কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান, ঘটনার পর আহত তাদের কয়েকজন শ্রমিককে হাসপাতালে এনে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। তিনি এ বিষয়ে আর কিছু জানেন না।