ময়মনসিংহে গণডায়রিয়ার নেপথ্যে পানিবাহিত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ময়মনসিংহ নগরজুড়ে চলমান গণডায়রিয়ার নেপথ্য কারণ উদ্ঘাটিত হয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকার পানি পরীক্ষা করে এতে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ‘ফিক্যাল কলিফর্ম’ নামক ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পাওয়া গেছে। ক্ষতিকর এ ব্যাকটেরিয়ার ফলেই সম্প্রতি নগরজুড়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে বলে ধারণা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের।
কেবল ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ময়মনসিংহের সহস্রাধিক শিশু, নারী ও পুরুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পরে বিষয়টি নজরে এনে গত ১১ই মার্চ সিটি করপোরেশনের সরবরাহ করা পানি পরীক্ষার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে লিখিত পত্র দেয় সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।
চিঠি পেয়ে রোগের কারণ অনুসন্ধানে নামে চারটি মেডিকেল টিম। শহরের বিভিন্ন এলাকার পানি সংগ্রহ করে আঞ্চলিক পানি পরীক্ষাগারে পরীক্ষা চালানো হয়। পরীক্ষায় পানিতে ক্ষতিকর ‘ফিক্যাল কলিফর্ম’ ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া যায়।
পরীক্ষাগারের সিনিয়র কেমিস্ট মো. আনিছুর রহমান খান জানান, সিটি করপোরেশনের চিঠি পেয়ে ওই দিনই নগরীর পুলিশ লাইন, গলগণ্ডা, খাগডহর, কাচিঝুলি, কাশর, ঢোলাদিয়াসহ ১০টি স্পট থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষার পর ঢোলাদিয়া ও কাচিঝুলি এলাকার পানিতে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
সাধারণত পানিতে এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকার কথা নয় উল্লেখ করে জুনিয়র কেমিস্ট শফিকুল ইসলাম জানান, পানি সরবরাহ লাইনের লিকেজ থেকে এই ব্যাকটেরিয়া পানিতে মিশে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন জানায়, কাচিঝুলী ও ঢোলাদিয়া এলাকার পানিতে জীবাণু পাওয়া গেছে। এ দুটি এলাকার মানুষ বস্তিবাসী। তাদের টয়লেট ও খাবার পানির চাপকল বা সরবরাহ লাইন খুব কাছাকাছি। এ কারণেও পানি দূষিত হতে পারে।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, পানি পরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। যে দুটি এলাকার পানিতে অল্প পরিমাণে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে সেসব এলাকার মানুষজনকে সরবরাহকৃত পানি পান না করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ময়মনসিংহ স্বাস্থ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ও জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এ কে এম আবদুর রব জানান, পানিতে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে শুনেছি। আমি রিপোর্ট দেখি নাই, তাই বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।