শাহনাজ রহমতুল্লাহর দাফন সম্পন্ন
কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহকে আজ রোববার বেলা ২ টা ৪০ মিনিটের দিকে বনানীর সম্মিলিত সামরিক বাহিনীর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ সময় তাঁর স্বামী মেজর (অব.) আবুল বাশার রহমতুল্লাহ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আত্মীয়স্বজনরা।
এর আগে বাদ জোহর বারিধারার ৯ নম্বর রোডের পার্ক মসজিদে শাহনাজ রহমতুল্লাহর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মেজর (অব.) আবুল বাশার রহমতুল্লাহ বলেন, ‘ আপনারা সবাই শাহনাজের জন্য দোয়া করবেন।’
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১টা ১২ মিনিটের দিকে শাহনাজ রহমতুল্লাহ শ্বাসকষ্টজনিত কারণে বারিধারার নিজ বাসায় ইন্তেকাল করেন। গুণী এই সংগীতশিল্পীর জন্ম ২ জানুয়ারি ১৯৫২ সালে। বাবা এম ফজলুল হক ও মা আসিয়া হক। তাঁর মেয়ে নাহিদ রহমতুল্লাহ লন্ডনে আর ছেলে সায়েফ রহমতুল্লাহ কানাডায় থাকেন।
শাহনাজ রহমতুল্লাহ দেশাত্মবোধক গান গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে রয়েছে—এক নদী রক্ত পেরিয়ে, একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়ে, একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল, প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, আমায় যদি প্রশ্ন করে, যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়।
এসব গানের মাঝে প্রথম তিনটি গান বিবিসির একটি জরিপে সর্বকালের সেরা বিশটি বাংলা গানের তালিকায় স্থান পায়। ১৯৯২ সালে তিনি একুশে পদক এবং ১৯৯০ সালে ছুটির ফাঁদে চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
শাহনাজ রহমতুল্লাহর কর্মজীবনের শুরু হয় ১৯৬৩ সালে ১১ বছর বয়সে ‘নতুন সুর’ নামক চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দেওয়ার মাধ্যমে। ১৯৬৪ সালে প্রথম টেলিভিশনে তাঁর গাওয়া গান প্রচারিত হয়। তিনি গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আলাউদ্দিন আলী, খান আতাসহ বিখ্যাত সব সুরকারের সুরে গান গেয়েছেন। পাকিস্তানে থাকার সুবাদে করাচি টিভিসহ উর্দু ছবিতেও গান করেছেন শাহনাজ রহমতুল্লাহ। গান শিখেছেন গজল সম্রাট মেহেদী হাসানের কাছে।
ব্যক্তিগত জীবনে শাহনাজ রহমতুল্লাহ ১৯৭৩ সালে আবুল বাশার রহমতুল্লাহর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। শাহনাজ রহমতুল্লাহর ভাই আনোয়ার পারভেজও একজন সুরকার ও সংগীত পরিচালক এবং আরেক ভাই জাফর ইকবাল ছিলেন জনপ্রিয় নায়ক ও গায়ক।