অমঙ্গল দূর করার প্রত্যয়ে সারা দেশে বর্ষবরণ উদযাপন
সমাজের সব অশুভ ও অমঙ্গল দূর করার প্রত্যয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে নতুন বাংলা বছর ১৪২৬ সনকে বরণ করে নিয়েছে বাঙালিরা। আজ রোববার সারা দেশে আনন্দ-উল্লাস, নেচে গেয়ে ও উৎসবের মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়।
ঢাকার বাইরে এনটিভির নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
মুহাম্মদ আবু তৈয়ব, খুলনা : নতুন পোশাকে, বর্ণিল সাজে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে খুলনায় পয়লা বৈশাখ উদযাপিত হয়েছে।
দিনের কর্মসূচি শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী আমতলায় (খুলনা জজকোর্টের সামনে) উদীচীর বর্ষবরণ সংগীতের মধ্যে দিয়ে। এখানে উদীচী ছাড়াও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীরা সংগীত ও কবিতা আবৃত্তি করেন।
সকাল সোয়া ৮টার দিকে নগরীর শিববাড়ী মোড় থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। এই শোভাযাত্রায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফায়েকুজ্জামানসহ শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রাটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শিববাড়ী মোড়ে এসে শেষ হয়।
মারুফ আহমেদ, সিলেট : সিলেটে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। ‘মস্তক তুলিতে দাও অনন্ত আকাশে’ এই স্লোগান নিয়ে এই শোভাযাত্রাটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রাটি সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে রিকাবীবাজারে জেলা স্টেডিয়ামে এসে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় প্রশাসনের কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগের নেতা এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। এ ছাড়া শোভাযাত্রায় সিলেটের বিভিন্ন স্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়।
অন্যদিকে, সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগেও একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় আবহমান বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের প্রতীকী উপস্থাপনের নানা বিষয় স্থান পায়।
সিলেটের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়েও বর্ণাঢ্য আয়োজনে বর্ষবরণ করা হয়। নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও বর্ষবরণ পালন করে।
নাফিজ আশরাফ, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট সকালে নগরীর চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংগীতের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু করে। জোটের আয়োজনে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নগরীতে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। এ ছাড়া জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন তাদের অফিস প্রাঙ্গণ এবং সরকারি বাসভবনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বাঙালিয়ানা খাবারে অতিথি আপ্যায়নের আয়োজন করে।
নগরীর বিভিন্ন সংগঠন ও পারিবারিক আয়োজনেও চলে পয়লা বৈশাখের আনন্দঘন উৎসব। ব্যবসায়ীরা নতুন বছরের হালখাতা খুলে বসেছেন। মিষ্টির দোকানে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। আর নগরীর দেওভোগ এলাকায় লক্ষ্মীনারায়ণ আখড়ায় আজ থেকে মাসব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু হয়েছে।
আইয়ুব আলী, ময়মনসিংহ : ‘মস্তক তুলিতে দাও অনন্ত আকাশে’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে নানা আয়োজনে ময়মনসিংহে বাংলা বর্ষবরণ ১৪২৬ উদযাপিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যবস্থাপনায় বর্ষবরণ উদযাপন পর্ষদের উদ্যোগে সকাল সোয়া ৮টার দিকে স্টেশন রোড থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। সেটি জয়নুল আবদীন পার্কের বৈশাখী মঞ্চে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আলোচনা সভা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
এর আগে সকালে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা, সাধারণ সম্পাদক মোয়োজ্জেম হোসেন বাবুল, ময়মনসিংহ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও প্রশাসক ইকরামুল হক টিটু, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠান, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য মনিরা সুলতানা মনি, পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন প্রমুখ।
বর্ষবরণ নির্বিঘ্ন করতে র্যাব পুলিশের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
মাহবুব হোসেন সারমাত, গোপালগঞ্জ : সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা উপজেলা পরিষদ মঞ্চে গান গেয়ে নতুন বাংলা বছরকে বরণ করে নেন।
এরপর জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহরে বর্ষবরণের বর্ণিল মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় আবহমান বাংলার বিভিন্ন চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়। এতে বিভিন্ন বয়সের মানুষ অংশ নিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন। শোভাযাত্রা শেষে পান্তা ইলিশ পরিবেশন করা হয়। এ ছাড়া জেলার শতাধিক স্থানে বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
শফিকুল ইসলাম শফিক, মাগুরা : জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সকাল ৮টায় মাগুরা নোমানী ময়দান থেকে পয়লা বৈশাখের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহরে বের হয়। এটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় নোমানী ময়দানে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় অংশ নেন মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীরেন শিকদার, জেলা প্রশাসক মো. আলী আকবর, পুলিশ সুপার খান মুহম্মদ রেজোয়ান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু নাসির বাবলু প্রমুখ। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের সহস্রাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেয়। শহরের বিভিন্ন স্থানে সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠান চলে।
আবু তাহের মুহাম্মদ, খাগড়াছড়ি : সকালে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে শহরে বর্ণাঢ্য বৈশাখী শোভাযাত্রা বের করা হয়। শরণার্থী পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন।
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদুল হক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. আহমার উজ্জামান, খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল আলমসহ স্থানীয় রাজনৈতিক সামাজিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে টাউন হলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় শিল্পীরা নাচ গানের মধ্য দিয়ে বৈশাখকে বরণ করে নেন।
এর আগে জেলা প্রশাসকের বাংলোয় বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য ‘পান্তাভাত’ খাওয়ার আয়োজন করা হয়। অন্যদিকে খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের উদ্যোগে স্থানী জোন মাঠে আয়োজন করা হয়েছে বৈশাখী মেলার।
মুনীর চৌধুরী, নড়াইল : নতুন বছরকে বরণ করে নিতে নড়াইলে জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বর ও সুলতান মঞ্চে ছয়দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। রোববার সকাল ৮টায় সুলতান মঞ্চে জেলা প্রশাসন ও বর্ষবরণ উদযাপন পর্ষদের আয়োজনে মঙ্গল প্রদীপ জ্বেলে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা। এর আগে সকাল সাড়ে ৬টায় মিতালী সংঘ মন্দির প্রাঙ্গণে শ্রুতি-ছন্দ সংগীত নিকেতন ও বর্ষবরণ উদযাপন পর্ষদের শতাধিক শিল্পীর কণ্ঠে প্রভাতি গানের মধ্য গিয়ে নতুন বছরকে বরণ করা হয়। সকাল ৮টায় নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজের সুলতান মঞ্চে থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষে হয়। এ সময় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ারুল ইসলাম, বর্ষবরণ উদযাপন পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক মুন্সি হাফিজুর রহমান, সদস্য সচিব মলয় কুমার কুণ্ডুসহ সাংস্কৃতিককর্মী, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
রশিদ আল মুনান, পিরোজপুর : সকাল ৮টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শহরের বিভিন্ন শহর প্রদক্ষিণ শেষে পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। এতে জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন, পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ হোসেন এবং বিভিন্ন শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়া রাজনৈতিক নেতারা অংশ নেয়।
শোভাযাত্রায় গ্রামীণ ঐতিহ্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে রং-বেরঙের ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডসহ অংশ নেয় অংশগ্রহণকারীরা।
এদিকে বৈশাখ উপলক্ষে পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ১০ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় বিভিন্ন ধরনের খেলনা, ফার্নিচার, কসমেটিকসসহ ২০০টিরও বেশি স্টল অংশ নিয়েছে।
রেজ আন উল বাসার তাপস, মেহেরপুর : সকাল ৭টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ড. শহীদ সামসুজ্জোহা পার্কে গিয়ে শেষ হয়। জেলা প্রশাসক আতাউল গনি, পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানসহ জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। এ ছাড়া পান্তা ও লোকজ-সাংস্কৃতিক উৎসবসহ দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সঞ্জিব দাস, ফরিদপুর : সকাল সাড়ে ৬টায় ফরিদপুর কোর্ট চত্বরে বর্ষবরণের আয়োজন করে ফরিদপুর সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা। এতে অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মৃধা, পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন খান, ফরিদপুর পৌর মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু প্রমুখ।
এরপর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জেলা প্রশাসনে আয়োজনে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয় শহরে। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। পরে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলা বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি।
অনুষ্ঠান শেষে বাংলার ঐতিহ্যবাহী দেশীয় হাডুডু, লাঠি ও সাপ খেলাসহ বিভিন্ন ধরনের খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
কে এম সবুজ, ঝালকাঠি : জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকালে শহরে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। শিশুপার্কের সামনে থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে একইস্থানে গিয়ে শেষ হয়। জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার মো. শাহ আলম, পৌরসভার মেয়র মো. লিয়াকত আলী তালুকদার, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ এতে অংশ নেয়।
এর আগে শিশুপার্কের উন্মুক্ত মঞ্চে গানে গানে নতুন বছরকে বরণ করা হয়। এ ছাড়া বর্ষবরণের কর্মসূচির মধ্যে দেশীয় খেলাধুলা, বাঙালি খাবার পরিবেশন, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী, সুনামগঞ্জ : হাওর এলাকায় নতুন ধানের উৎসবে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ নানা আয়োজনে সুনামগঞ্জে বর্ষবরণ পালিত হয়েছে। বাংলা বছরের প্রথম দিনকে স্বাগত জানিয়ে সকালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহরের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশগ্রহণে মঙ্গল শোভাযাত্রা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বের হয়। শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জুবিলি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদ, পুলিশ সুপার বরকতুল্লাহ খানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন।
এ ছাড়া বর্ষবরণে শহরের বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে পৃথক পৃথক স্থানে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
বিশ্বজিৎ সাহা, নরসিংদী : শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, নববর্ষ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা একই সূত্রে গাঁথা। আর এই নববর্ষের চেতনাকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। বাঙালি জাতির ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে লালন করে বাংলা নববর্ষ।
সকালে নরসিংদীর মনোহরদীতে বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রায় শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, এ নববর্ষে আমরা অঙ্গীকার করছি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা একসাথে কাজ করে যাব। আগামী প্রজন্ম এ নববর্ষকে লালন এবং ধারণ করবে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
মঙ্গল শোভাযাত্রাটি মনোহরদী উপজেলা কমপ্লেক্স থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে মনোহরদী সরকারি ডিগ্রি কলেজে গিয়ে শেষ হয়। পরে কলেজ প্রাঙ্গণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াশীষ রায়, উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান বীরু, মনোহরদী পৌরসভার মেয়র আমিনুর রশীদ সুজন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাফিয়া আক্তার শিমু প্রমুখ।
আহমেদ সাব্বির সোহেল, মানিকগঞ্জ : সকালে পান্তা পুটি খাওয়ার মধ্য দিয়ে মানিকগঞ্জে শুরু হয় পয়লা বৈশাখ। সকাল ৯টায় শুরু হয় সার্বজনীন মঙ্গল শোভাযাত্রা। এতে ঘোড়ার গাড়ি, ভ্যানে চড়ে বিভিন্ন গ্রামীণ ঐতিহ্যের ছবি নিয়ে অংশ নেয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
শহরের বিজয়মেলা মাঠ থেকে বের হয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে বিজয়মেলা মাঠে শেষ হয়।
মোস্তাফিজ আমিন, ভৈরব : সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ, ভৈরবের আয়োজনে পৌর নিউমার্কেটের সামনে থেকে একটি মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। সেটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেঘনা নদীর তীরে ত্রিসেতুর নিচে বৈশাখী মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
দেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈশাখী মেলা হিসেবে পরিচিত এই মেলায় প্রতি বছরের মতো এবারও গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খৈ-মুড়ি, মণ্ডা, কদমা ও মাটির তৈজসপত্র বেচা-কেনাসহ আয়োজন করা হয়েছে পুতুল নাচ, সার্কাস, নাগরদোলা ইত্যাদির।
ভৈরবসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি জেলা-উপজেলার বিপুল নারী-পুরুষ, শিশুর সমাগম ঘটেছে ওই মেলায়। আর এই উৎসবকে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে পুলিশ ও র্যাবের পক্ষ থেকে রাখা হয়েছে টহলের ব্যবস্থা।
আবুল কালাম আজাদ, লক্ষ্মীপুর : সকালে কালেক্টরেট ভবন প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় লাঠি খেলা ও পালকি প্রদর্শনের মতো বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। এতে জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ দলমত নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করে।
শোভাযাত্রা শেষে কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে পাঁচ দিনব্যাপী লোকজ মেলা ও মনোজ্ঞ সংগীতানুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জন পাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার আ স ম মাহাতাব উদ্দিন, সিভিল সার্জন মোস্তফা খালেদ আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, সাধারণ সম্পাদক নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন প্রমুখ।
পরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপস্থিত সবার মধ্যে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন প্রকার খাদ্রসামগ্রীসহ পান্তা-মাছভাজা পরিবেশন করা হয়।
কাকন রেজা, শেরপুর : শেরপুরে নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে নতুন বাংলা বছরকে বরণ করা হয়। সকালে শেরপুর ডিসি উদ্যানে সাংস্কৃতিককর্মীদের সুরে সুরে কল্যাণ কামনার মধ্যে দিয়ে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান শুরু হয়। সুরের প্রার্থনায় নতুন বছরকে বরণ করার পর ডিসি উদ্যান থেকে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। এতে জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক, জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব, পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীমসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। বিপুল মানুষের অংশগ্রহণে শোভাযাত্রাটি শহর প্রদক্ষিণ করে।
এদিকে জেলার প্রতিটি উপজেলাতেই নববর্ষ উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া দিনব্যাপী সরকারি ও বেসরকারিভাবে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের। বিভিন্ন জায়গায় বসেছে বৈশাখী মেলাও।
লুৎফর রহমান মিঠু, ঠাকুরগাঁও : সকাল ৬টায় নিক্কন সংগীত বিদ্যালয়ের পরিবেশনায় জজকোর্ট বটমূল চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় প্রভাতী অনুষ্ঠান। রবীন্দ্র, নজরুল, ভাওয়াইয়া, পল্লীগীতি, আঞ্চলিক গান ছাড়াও পরিবেশিত হয় কবিতা আবৃত্তি। অনুষ্ঠান উপভোগ করতে সকাল থেকে জজকোর্ট বটমূলে নানা বয়সী সংগীতপ্রেমীরা আসতে শুরু করে। কানায় কানায় ভরে যায় বটমূল চত্বর।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থানীয় বড় মাঠ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে পান্তা-ইলিশ ও শুঁটকির ভর্তা পরিবেশন করা হয়।
হারুনুর রশিদ চৌধুরী, হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষকে বরণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে সকালে নবসূর্য বরণ করে বর্ণমালা খেলাঘর আসর। পরে ঐতিহাসিক শিরীষ তলায় অনুষ্ঠিত হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মোরগের লড়াই প্রতিযোগিতা দর্শকদের আকৃষ্ট করে।
শহীদুল হুদা অলক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : সকালে পুরাতন বছরের গ্লানি ভুলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সব বয়সের মানুষ মেতে উঠে বর্ষবরণ উৎসবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আম বাগান থেকে ঢাক-ঢোল ও অন্যান্য বাদ্যসহ নানান রঙের প্রতিকৃতি নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শিশুপার্কে গিয়ে শেষ হয়। বর্ষবরণ উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়।
ইকরাম চৌধুরী টিপু, কক্সবাজার : সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় অসাম্প্রদায়িক প্রত্যয়ে সব বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে। জেলা প্রশাসন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, কক্সবাজার আর্টক্লাব, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শিল্পী, পেশাজীবী, নারী-শিশুসহ সর্বস্তরের মানুষ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে। কক্সবাজার আর্টক্লাবের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রায় লোকজ সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে তৈরি করা হয় বাঘ, ঘোড়া, নৌকা।
পাবলিক হল মাঠে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত বৈশাখী মেলায় চিরায়ত বাংলা গান, নাচ, আবৃত্তি, নাটক, সাপ খেলাসহ বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষকে বরণ করা হয়।
পয়লা বৈশাখে কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন হোটেল-মোটেল নতুন করে সাজানো হয়েছে। পান্তা-ইলিশসহ বাঙালি খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
শাহজাহান সিরাজ মিঠু, জয়পুরহাট : বাংলা নববর্ষকে সামনে রেখে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার গোহাটাতে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী বিশাল মাছের মেলা। ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মূলত বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় মাছের সংরক্ষণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছের পরিচিতি তুলে ধরার লক্ষ্যে এ মাছমেলার আয়োজন ।
সকাল সাড়ে ১০টায় বর্ণিল বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন পাঁচবিবি পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নূরুন্নবী, উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মামুনুর রশীদ, পাঁচবিবি পৌরসভার প্যানেল মেয়র নূর হোসেন প্রমুখ।
মেলায় জাতীয় মাছ ইলিশ ছাড়াও জয়পুরহাট ও আশপাশের বিভিন্ন জেলার খাল-বিলের বিভিন্ন প্রজাতির ও আকারের বিপুল দেশীয় মাছের দোকান বসেছে। রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে মাছের বেচাকেনা। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, মেলায় মাছের আমদানি প্রচুর হলেও দাম কিন্তু বেশ চড়া।
ভজন দাস, নেত্রকোনা : সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের পুরাতন কালেক্টরেট প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হাবীবা রহমান খান শেফালী, জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম, পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী, পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম খান, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ জেলার সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে। পরে জেলা পুরাতন কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়া জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে ও জেলার ১০টি উপজেলায় মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ।
শিহাব উদ্দিন বিপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাহিত্য একাডেমির আয়োজনে সাত দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসব শুরু হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে মঙ্গল প্রদীপ জ্বেলে ৩৩তম উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান।
উৎসব কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবু তাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান ডা. মো. আবু সাঈদ, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পি, শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক এ এস এম ওসমান গনি সজীব। এ সময় স্বাগত বক্তব্য দেন সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম শিবলী।
মেলায় প্রথম দিন থেকেই দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। সাত দিনব্যাপী মেলায় বিভিন্ন রকমের ২৮টি স্টল অংশগ্রহণ করেছে।
এদিকে সকালে জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর হাইস্কুল মাঠে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়। মেলার উদ্বোধন করেন জিসকা ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিচালক সাদ্দাম খান শান্ত। মেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু। শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানের বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান উদ্দিন আহমেদ খালেদের সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা ছিলেন মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক শাহ মো. মোতাসিম বিল্লাহ। এ সময় বক্তারা নিজস্ব সংস্কৃতি বিকাশ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। মেলায় ৩০টি স্টল স্থান পায়।
ইবি সংবাদদাতা : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে ক্যাম্পাসে বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ক্যাম্পাসের প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাংলা মঞ্চে গিয়ে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মিলিত হয়। শেষে বাংলা মঞ্চে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সেলিম তোহা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পয়লা বৈশাখ-১৪২৬ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। বৈশাখী মেলা ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলার কার্যক্রম চলবে বলে জানা গেছে।
মো. জালাল উদ্দিন, কুমিল্লা : সকালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শাখা থেকে একটি মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নগর উদ্যানের বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে গিয়ে শেষ হয়। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক দল মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংগ্রহণ করে। এতে নেতৃত্ব দেন সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম। এ ছাড়া নববর্ষ উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।