১১ মামলায় খালেদা জিয়ার পরবর্তী শুনানি ১২ জুন
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ ১১ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৫ জুন দিন ধার্য করেছেন আদালত। আজ রোববার পুরান ঢাকার অস্থায়ী আদালতে স্থাপিত মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ দিন ধার্য করেন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের আইনজীবী জয়নুল আবেদিন মেজবাহ এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
মেজবাহ জানান, আজ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ১১ মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বেশির ভাগ মামলা উচ্চ আদালতে স্থগিত থাকায় বিচারক নতুন দিন ধার্য করেন।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে মিরপুরের দারুস সালাম থানায় নাশকতার আটটি, রাষ্ট্রদ্রোহের একটি ও যাত্রাবাড়ী থানার বিস্ফোরক ও হত্যা আইনের দুটি।
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম রাশেদ তালুকদারের আদালতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ওই মামলায় গত বছরের ৫ এপ্রিল খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেন।
মামলার আরজিতে বলা হয়, ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, ‘আজকে বলা হয়, এত লক্ষ শহীদ হয়েছে। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে।’
ওই দিন খালেদা জিয়া আরো বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না।’
যাত্রাবাড়ী থানার মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রলবোমা হামলা হয়। এতে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন। পরে তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নূর আলম (৬০) নামের এক যাত্রী।
এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কে এম নুরুজ্জামান।
মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন—বিএনপির প্রয়াত স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, খন্দকার মাহবুব হোসেন ও শওকত মাহমুদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।
অন্যদিকে, ২০১৫ সালে দারুস সালাম থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে আটটি মামলা দায়ের করা হয়। এই আট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ড দিয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায় দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৫। রায়ের পর পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থেকে সাজা ভোগ করছেন খালেদা জিয়া। দণ্ডিত হওয়া মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও অন্য আরো বেশ কয়েকটি মামলায় জামিন না হওয়া সংক্রান্ত কারণে খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন। বর্তমানে তিনি কারা হেফাজতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আছেন।