বৈশাখী মেলায় ঝগড়াকে কেন্দ্র করে কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা
কিশোরগঞ্জে বৈশাখী মেলায় ঝগড়াকে কেন্দ্র করে সাগর (১২) নামের এক কিশোরকে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। এর প্রতিবাদে ও খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ বুধবার দুপুরে জেলা শহরের হারুয়া এলাকা থেকে লাশ নিয়ে মিছিল বের করে বিভিন্ন বয়সী কয়েকশ নারী-পুরুষ।
শহরের আখড়াবাজার এলাকায় মিছিলটি পৌঁছার পর পুলিশ আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মিছিলকারীরা এগিয়ে যায় এবং বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় হারুয়ায় গিয়ে শেষ হয়। মিছিলকারীরা সঙ্গে থাকা ব্যানারে হত্যার জন্য মূল অভিযুক্ত হিসেবে হারুয়া এলাকার আবু হানিফ ওরফে হাছু ডাকাত ও তার সহযোগী দুদুল, সাফি, বাবু, শহীদ ও জিমেলকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এলাকাবাসী জানায়, শহরের হারুয়া কাতিয়ারচর এলাকায় অবৈধভাবে বসানো একটি বৈশাখী মেলাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে মেলার আয়োজকদের সঙ্গে সাগরের কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জের ধরে রাত ৮টার দিকে হারুয়া সওদাগর পাড়ার সাগরকে শহরের পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামনের রাস্তায় প্রতিপক্ষের লোকজন কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাতেই তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ৯টার দিকে মৃত্যু হয়।
কিশোরগঞ্জে বৈশাখী মেলায় প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত সাগরের লাশ নিয়ে এলাকাবাসীর মিছিল। ছবি : সংগৃহীত
সাগরের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রাত ১২টার দিকে উত্তেজিত এলাকাবাসী হারুয়া চৌরাস্তা মোড়ে জড়ো হয়ে প্রতিপক্ষের বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলাকারীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে হামলাকারীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটাসহ পুলিশ ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ মো. নাজমুল হাসান।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত সাগর কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া সওদাগরপাড়া এলাকার বকুল মিয়ার ছেলে এবং একজন দোকান কর্মচারী বলে জানা গেছে।