‘নুসরাতের ঘটনা সরকারের জন্য একটি অগ্নিপরীক্ষা’
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘নুসরাতের ঘটনা সরকারের জন্য একটি অগ্নিপরীক্ষা।’ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফী হত্যার মতো ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে, যার বিচার না হওয়ায় অপরাধের ঊর্ধ্বগতি চলমান বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আজ রোববার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। নুসরাত হত্যার প্রতিবাদ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করে টিআইবি।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নুসরাতকে নির্যাতন করে পুড়িয়ে হত্যা করা হবে সেটি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য ছিল না, অপ্রত্যাশিত। শুধু নুসরাত একা নয়, এরকম ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন যে অপরাধের ঊর্ধ্বগতি চলমান রয়েছে। এবং সত্যিকার অর্থে কোন একটি ঘটনারও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি।’
ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, ‘নুসরাতের সঙ্গে যে অন্যায়-অবিচার হয়েছে, তাকে যেভাবে প্রাণ দিতে হয়েছে, সেটি স্বাধীন বাংলাদেশের ৪৮তম বছরে এসে আমরা কখনো স্বপ্নের মধ্যেও ভাবতে পারিনি।’
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আমরা চাই সরকার ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে যে তারা আইনের শাসনে বিশ্বাসী। যদি এটি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়, যদি নুসরাত হত্যার বিচার না হয় তাহলে এদেশের মানুষের সরকার ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি কোন আস্থা থাকবে না।’
এ ঘটনাকে সত্যিকার অর্থে একটি এসিড টেস্ট হিসেবে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তিনি। তিনি কোন প্রকার ভয় ও প্রলোভনের ঊর্ধ্বে থেকে যারা এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
তিনি আরো বলেন, ‘একই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, স্থানীয় রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্তপক্ষ সকলেই জড়িত, এক ধরণের সিন্ডিকেট।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার এবং তারা দুর্নীতিগ্রস্থ, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত এবং ব্যাপকভাবে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। প্রত্যেকটি অপকর্মে তারা অপরাধীদের পাশে দাঁড়ায়। আর যারা অপরাধের শিকার তাদের পালিয়ে বেড়াতে হয়। তাই আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাব নুসরাতের হত্যার সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যারা অপরাধ করতে তাদের শাস্তি দিতে হবে। যেন আইনের শাসন বাস্তবিক অর্থে আছে এরকম যেন দৃষ্টান্ত থাকে।’
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা- নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান, সিভিক এনগেইজমেন্ট বিভাগের পরিচালক ফারহানা ফেরদৌস, অর্থ ও প্রশাসন বিভাগের পরিচালক আব্দুল আহাদ, এফসিএমএ এবং আউটরিচ ও কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মন্জুর-ই-আলম। এছাড়াও টিআইবির সদস্য, টিআইবির অনুপ্রেরণায় ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ইয়ুথ এনগেজমেন্ট এন্ড সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপের সদস্যসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীবৃন্দ, টিআইবি কর্মী ও নানা শ্রেণী পেশার মানুষ এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।