আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, হাইব্রিডরা দলের অনেক ক্ষতি করছে। এরা বিএনপি-জামায়াতের প্রেতাত্মা। তা না হলে একজন হত্যাকারীকে আশ্রয় দিতে পারে? এমন দুই একজনের জন্য আমাদের সব অর্জন নষ্ট হতে দিতে পারি না।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের উদ্যোগে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মোহাম্মদ নাসিম। তিনি ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বিএনপির নির্বাচিতদের শপথ নিয়ে সংসদে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্যথায় সব হারাতে হবে দলটিকে।

বার্তা সংস্থা বাসসের খবরে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘খুনি, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সেই লক্ষ্যে আগামী ২৬ এপ্রিল মতিঝিলে একটি সমাবেশ করব। কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ সব অপকর্মের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে।’

সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি, সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ড. শাহাদাত হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিএনপি বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালন না করে, জনগনের সাথে প্রতারণা করে ইতিহাস অস্বীকার করতে চায়। যারা জাতীয় দিবসগুলো পালন করে না তারা কি করে স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে?

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে দলের নেতাদের দেওয়া বক্তব্যের জবাবে মতিয়া চৌধুরী বলেন, তাঁর চিকিৎসা কি ভাবে হবে তা নির্ধারণ করবে ডাক্তাররা। দলের নেতারা কেন খালেদা চিকিৎসার ব্যাপারে জনগনকে বিভ্রান্ত করছেন।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, যারা ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস পালন করে না, তারা স্বাধীনতার পক্ষের বা স্বাধীনতার বিশ্বাস করে এটা আমার বিশ্বাস হয় না। হঠাৎ করে স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়নি। দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে এই প্রেক্ষাপট বঙ্গবন্ধু তৈরি করেছিলেন।

হানিফ বলেন, জিয়াউর রহমান কারফিউ দিয়ে দেশ চালিয়েছেন, এটার মধ্যে বিএনপি ও বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবীরা গণতন্ত্র খুঁজে পায়। আসলে বিএনপি নামের এই দলটি তৈরি করেছিল পাকিস্তান। এই দলের লক্ষ্য বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। এই বিষফোড়া দলটি যত দিন থাকবে তত দিন দেশের উন্নয়নের বাঁধা থাকবে।

রাশেদ খান মেনন বলেন, আজ বিএনপি-জামায়াতকে কোণঠাসা করতে পেরেছি কিন্তু রাজনৈতিকভাবে পুরোপুরি পরাজিত করতে পারিনি। আজ উগ্রসাম্প্রদায়িক শক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে। উগ্রসাম্প্রদায়িক শক্তি শ্রীলংকায় হামলা করেছে। এদেশকে আমরা এই ধ্বংসের কিনারায় ঠেলে দেব কিনা আজ আমাদের ভাবতে হবে।

হাসানুল হক ইনু বলেন, যারা মুজিবনগর দিবস পালন করে না, তারা পাকিস্তানের দালাল। পাকিস্তানপন্থী বিএনপি মুজিবনগর দিবসকে অস্বীকার করে। জামায়াত ও জঙ্গিবাদকে এই বিএনপি পৃষ্টপোষকতা করে। এই বিএনপি-জামায়াত রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে বিতারিত না হলে গণতন্ত্র মজবুত হবে না। এদেরকে রাজনীতির মঞ্চ থেকে চিরতরে বিদায় জানাতে হবে। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।