সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তখন থেকেই চিকিৎসা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর জামাতা রাজেশ শিকদার।

রাজেশ শিকদার আরো জানান, গতকাল বিকেল ৫টায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসা শুরু হয়েছে। আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত ডাক্তার কোনো আগ্রগতি জানাননি।

গতকাল  মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সুবীর নন্দীকে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত সোমবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সুবীর নন্দীকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই আবার ফিরে আসে। পরে গুরুতর অসুস্থ তাঁকে ফিরিয়ে নেওয়া হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ওই রাতে সিঙ্গাপুরে নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ফাল্গুনী নন্দী জানান, সোমবার রাত ৮টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকায় আসে। রাত পৌনে ১১টায় তাঁকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা হয়। উড্ডয়নের পরই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ত্রুটি ধরা পড়ে। পরে অ্যাম্বুলেন্সটি নেমে আসে। মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ে।

গত ১২ এপ্রিল শ্রীমঙ্গলে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন সুবীর নন্দী ও তাঁর পরিবার। পয়লা বৈশাখে শ্রীমঙ্গল থেকে ঢাকা ফেরার পথে উত্তরায় কাছাকাছি আসতেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে সুবীর নন্দীর। এর পর সেখান থেকে সরাসরি সিএমএইচে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পরই তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। তাঁর মস্তিষ্কের অবস্থা ভালো নয়। এ ছাড়া তাঁর কিডনি ও ফুসফুসে প্রদাহ রয়েছে।

দেশের জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পীর ১৯৮১ সালে প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ প্রকাশিত হয়। ১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে প্রথম প্লে-ব্যাক করেন তিনি। দীর্ঘ ৪০ বছরের সংগীত ক্যারিয়ারে আড়াই হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন তিনি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন পাঁচবার। সংগীতে অবদানের জন্য এ বছর তিনি পান দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক।

সুবীর নন্দীর গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানগুলো হলো—‘ও আমার উড়াল পঙ্খী রে’, ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, ‘চাঁদে কলঙ্ক আছে যেমন’, ‘বধূ তোমার আমার এই যে পিরিতি’, ‘একটা ছিল সোনার কন্যা’, ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘আমি বৃষ্টির কাছ থেকে’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘আশা ছিল মনে মনে’ ইত্যাদি।