ঝড়ো হাওয়ায় সারা দেশে প্রাণ গেল পাঁচজনের
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে ঝড়ো হাওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঁচজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে বরগুনায় দুজন, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে দুজন ও বাগেরহাটে একজন রয়েছেন।
অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র তেজ কিছুটা কমে আজ শনিবার সকাল ৬টায় খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ কারণে এসব এলাকায় ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ঝড়টি ক্রমশ দুর্বল হয়ে উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের স্থলভাগ দিয়ে প্রবেশ করায় তা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কম। সংশ্লিষ্ট এলাকার সাগর ও নদী উত্তাল রয়েছে। নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এই অবস্থায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে সাত নম্বর সতর্ক সংকেত, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ছয় নম্বর সতর্ক সংকেত এবং কক্সবাজারে চার নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বরগুনা থেকে আমাদের প্রতিনিধি সোহেল হাফিজ জানিয়েছেন, গতকাল শুক্রবার বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় ঘরচাপায় দুজন নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের মৃত আবদুল বারেকের স্ত্রী নুরজাহান (৬০) এবং তাঁর নাতি জাহিদুল (৫)।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হানিফ সিকদার জানান, গতকাল ঝড়ো হাওয়ায় চরদুয়ানী ইউনিয়নে গাছ ভেঙে ঘরের উপর পড়লে ঘরও ভেঙে যায়। এতে ঘরচাপা পড়ে নানি ও নাতি নিহত হয়।
বাগেরহাট থেকে রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, গতকাল দুপুরে সদর উপজেলায় শাহানুর বেগম নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। ঝড়ো হাওয়ায় গাছ ভেঙে গায়ের ওপর পড়লে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাহানুর বেগম উপজেলার সুরামনি গ্রামের মোজাহার হোসেনের স্ত্রী।
খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফকির ফহম উদ্দিনের জানান, দমকা হাওয়ার মধ্যেই বাড়ির সামনে ধান মাড়াই করছিলেন শাহানুর। একপর্যায়ে পাশের একটি গাছ ভেঙে তাঁর উপর পড়ে যায়। এ সময় তিনি গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান।
নোয়াখালী থেকে মো. মাসুদ পারভেজ জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় ঘরচাপায় ইসমাইল হোসেন (২) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাতে সুবর্ণচর উপজেলার চর আমানউল্লাহপুর ইউনিয়নের একটি কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হলে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে সুবর্ণচর উপজেলার চর আমানউল্লাহপুর ইউনিয়নের একটি কাঁচাঘর বিধস্ত হয়। এ সময় ঘরের মধ্যেই চাপা পড়ে মারা যায় শিশু ইসমাইল।
এদিকে সুবর্ণচর ও সদর উপজেলায় ‘ফণী’র প্রভাবে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। দুটি উপজেলায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন। আহতদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরো ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে এলাকাগুলোতে। এরইমধ্যে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে ওইসব এলাকা।