সুবীর নন্দী আর নেই
বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী আর নেই। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৪টায় মারা যান তিনি।
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক অধ্যাপক সামন্তলাল সেন এনটিভি অনলাইনকে ওই তথ্য জানান। তিনি জানান, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরপর তিনবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন সুবীর নন্দী।
এর আগে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও একবার ‘হার্ট অ্যাটাক’ হয়েছিল তাঁর। ১৮ দিন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৩০ এপ্রিল সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয় সুবীর নন্দীকে।
বাংলাদেশে সুবীর নন্দীর চিকিৎসার বিষয়টি সমন্বয় করছিলেন অধ্যাপক সামন্তলাল সেন। তিনি বলেন, ‘বারবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে তাঁর, সেইসঙ্গে সুবীর নন্দীর মাল্টিপল অর্গান ফেইলিউর হচ্ছিল।’
সংগীতে অবদানের জন্য এ বছরই সুবীর নন্দীকে একুশে পদকে ভূষিত করে সরকার।
বেতার, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রের প্লেব্যাকে তাঁর অসংখ্য জনপ্রিয় গান রয়েছে। চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকের জন্য চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি।
গত ১২ এপ্রিল শ্রীমঙ্গলে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন সুবীর নন্দী ও তাঁর পরিবার। পয়লা বৈশাখে শ্রীমঙ্গল থেকে ঢাকা ফেরার পথে উত্তরায় কাছাকাছি আসতেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে সুবীর নন্দীর। এরপরই তাঁকে সেখান থেকে সরাসরি সিএমএইচে নেওয়া হয়।
দেশের জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পীর ১৯৮১ সালে প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ প্রকাশ হয়। ১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে প্রথম প্লে-ব্যাক করেন তিনি। দীর্ঘ ৪০ বছরের সংগীত ক্যারিয়ারে আড়াই হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন তিনি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন পাঁচবার। সংগীতে অবদানের জন্য এ বছর তিনি পান দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক।
সুবীর নন্দীর গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানগুলো হলো ‘ও আমার উড়াল পঙ্খী রে’, ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, ‘চাঁদে কলঙ্ক আছে যেমন’, ‘বধূ তোমার আমার এই যে পিরিতি’ ‘একটা ছিল সোনার কন্যা’ , ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘আমি বৃষ্টির কাছ থেকে’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘আশা ছিল মনে মনে’ ইত্যাদি।