অতিরিক্ত মালামাল বহনের দায়ে ৫ ট্রাককে সোয়া ১০ লাখ টাকা জরিমানা
নারায়ণগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অতিরিক্ত মালামাল পরিবহনের দায়ে আটক পাঁচটি ট্রাককে ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ।
সোমবার কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত দুই মাস আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অতিরিক্ত মালামাল পরিবহনের অভিযোগে পৃথকভাবে পাঁচটি ট্রাক আটক করা হয়। গতকাল সেগুলোকে সব মিলিয়ে মোট ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অতিরিক্ত মালামাল পরিবহন ও জরিমানা প্রসঙ্গে হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে মহাসড়কগুলো যানবাহন চলাচলের উপযোগী করছে। তো এই সুবিধা ভোগ করার জন্য এই মহাসড়কগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা একান্ত প্রয়োজন। পরিবহন শিল্পের স্বার্থেই এ মহাসড়কগুলো যেন ভালো থাকে পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সে উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ এই মহাসড়কের সবচেয়ে বড় বেনিফিশিয়ারি পরিবহন শিল্পের মালিক এবং শ্রমিকরা। আমি সবাইকে আহ্বান জানাব যে, সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে এই যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে সেগুলো মেনে ভবিষ্যতে যেন আর কেউ ওভারলোড না টানে।’
‘দুই অ্যাক্সেল, তিন অ্যাক্সেল এবং চার অ্যাক্সেলের গাড়ি কতটুকু লোড নিতে পারবে এটা বলে দেওয়া আছে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে সার্কুলারটা জারি হওয়ার পর থেকে আমরা এটা এতদিন ধরে সংশোধনমূলক করছি। আমরা গাড়ি ধরছি, ধরে বলছি যে, ওভারলোডটা অন্য গাড়িতে নিয়ে যান। দীর্ঘ এক বছরে এটা অনেক সফল হয়েছে। এখন আমরা এটার বিষয়ে আইনগতভাবে যথাযথ পদক্ষেপে যাচ্ছি, তারই পরিপ্রেক্ষিতে খাটিয়াতাতে একটা গাড়ি যেখানে ৩০ টন লোড নিতে পারবে, সেখানে তারা ৫২ টন লোড ক্যারি করছিল, এরকম কয়েকটি গাড়ি আটক করা হয়েছে। এবং সার্কুলার অনুযায়ী যে পরিমাণ জরিমানা হওয়ার কথা পাঁচটা গাড়িতে প্রায় ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকা। জরিমানার টাকা তারা জমা দিয়েছে, এবং অতিরিক্ত মালামাল অন্য গাড়িতে করে বহন করেছে।’
জরিমানার অর্থ এরই মধ্যে ব্যাংক পে-অর্ডারের মাধ্যমে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অতিরিক্ত মালামাল বহনকারী যানবাহন চলাচল বন্ধসহ নিরাপত্তা নিশ্চিতে হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা।
মালামাল পরিবহন বিষয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুসারে, ছয় চাকার যানবাহন সর্বোচ্চ ২২ টন, ১০ চাকার যানবাহন ৩০ টন ও ১৪ চাকার যানবাহন ৪৮ টন মালামাল বহন করতে পারবে। অথচ কিছু অসাধু গাড়ি মালিক ও চালকরা ৪০ থেকে ৮০ টন পর্যন্ত মালামাল পরিবহন করে বলে পুলিশের অভিযোগ।
সম্প্রতি সড়ক ও মহাসড়কে ব্যাপক তৎপরতায় আটক করা হচ্ছে অতিরিক্ত মালামাল বহনকারী যানবাহন। পুলিশ জানায়, জরিমানা প্রদান করা পরিবহন মালিকরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, তাঁরা আর অনিয়ম করবেন না। তাদের মতে চালকরাই গাড়ি মালিকদের ফাঁকি দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ কামাতে এসব অপকর্ম করে যাচ্ছে। এর মাসুল দিতে হচ্ছে মালিকদের।