দেবরদের ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন ভাবি-ভাইপো
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের দেবরদের ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন ভাবি ও ভাইপো। মঙ্গলবার পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের বাদালপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত হজরত আলীর স্ত্রী মেরিনা খাতুন তাঁর ছেলে মিলন হোসেনকে (১৯) হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগে কয়েক মাস আগে তাঁর দেবরদের নামে মিথ্যা হত্যা মামলা করে। তবে আট মাস পর মঙ্গলবার ময়মনসিংহ শহর থেকে মিলন হোসেনকে জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক জানান, মালিগাছা ইউনিয়নের বাদলপাড়া গ্রামের মৃত হজরত আলীর পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে তাঁর ভাইদের সঙ্গে হজরত আলীর স্ত্রী মেরিনা খাতুনের বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জের ধরে দেবরদের ফাঁসাতে মেরিনা খাতুন তাঁর ছেলে মিলনকে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়েছে বলে দেবর সাইদুল, আসলাম ও ইসলামকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন।
মামলার আর্জিতে মেরিনা খাতুন উল্লেখ করেন, গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে তাঁর ছেলে মিলন হোসেন বাড়ি ফেরার পথে তাঁর দেবর আসামি সাইদুল, আসলাম ও ইসলাম মিলনকে অপহরণ করে হত্যার পরে লাশ গুম করেন।
আদালত পাবনা সদর থানাকে অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করার আদেশ দেন। পাবনা সদর থানা মামলা হিসেবে গ্রহণ করে উপপরিদর্শক (এসআই) মহিউদ্দিনকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দিলে বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মহিউদ্দিন জানান, পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস, সদর সার্কেলের ইবনে মিজান ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ মিলনের জীবিত থাকা এবং অবস্থান নিশ্চিত হয়। পরে পুলিশ ময়মনসিংহ জেলা শহরের একটি রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে মৃত সেজে আত্মগোপনে থাকা মিলনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে। মিলন পাবনার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক একেএম কামাল উদ্দিনের কাছে স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক জানান, গত আট মাস মিলন নিজেকে মৃত প্রমাণ করতে আত্মগোপন করে রেখেছিল। এই আট মাসে তিনি ময়মনসিংহ, যশোর, সিলেট, ঈশ্বরদীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করেছেন।