নাটক সরণিতে জমজমাট ইফতার বাজার
মঙ্গলবার বিকেল গড়াতেই নাটক সরণি তথা বেইলি রোডে ভিড় জমতে শুরু করে। গাড়িতে করে পরিবারসহ এসে ঢুকছেন বাহারি ধরনের ইফতার সামগ্রী কিনতে। অধিকাংশ ইফতার সামগ্রীর দাম বেশি হলেও ক্রেতারা কিনছেন লাইন ধরে। এতে স্বস্তি প্রকাশ করছেন বিক্রেতারা।
মঙ্গলবার প্রথম রোজার ইফতার পর্বের আগে রাজধানীর নাটক সরণিতে (পুরোনো বেইলি রোড) জমে ওঠে ইফতার বিকিকিনি। এখানে উচ্চবিত্তদের কথা মাথায় রেখে ইফতার তৈরি করে থাকেন বলে জানান বিক্রেতারা। এদিকে দাম একটু বেশি মনে হলেও ইফতার সামগ্রী কিনতে ভাবছেন না বলে জানান কয়েকজন ক্রেতা।
নাটক সরণির কয়েকটি ইফতার বিক্রির দোকান ও রেস্টুরেন্ট ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি গরুর চাপ ১০০০ টাকা, খাসির চাপ কেজি ১২০০ টাকা, দেশি মুরগির রোস্ট পিস প্রতি ২৫০ টাকা, গরুর মগজ ১২০০ টাকা কেজি, হালিম ১৫০ থেকে ৮০০ টাকা, খাসির লেগ রোস্ট পিস প্রতি ৫০০ টাকা, পাঁচ পিস দই বড়া ২০০ টাকা, শাহি ছোলা কেজি ২৫০ টাকা, মোরগ পোলাও ২৫০ টাকা, শাহি জিলাপি সাড়ে ৩০০ টাকা, পনির পরোটা ৮০ টাকা এবং চিকেন রোল ৫০ টাকা পিসসহ আরো কয়েক ধরনের ইফতার সামগ্রী বিক্রি করছেন বিক্রেতা।
নাটক সরণির সুইস নামের একটি দোকানে ঠিক বিকেল সাড়ে ৫টায় গিয়ে দেখা যায়, হালিম কেনার জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকে। তবে বিক্রেতা বলছেন, হালিম শেষ হয়ে গেছে। সেখানে দাড়িয়ে থাকা আব্দুল কবীর বলেন, অনেক সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছি। এখন দোকানি বলছেন, শেষ হয়ে গেছে হালিম। দেখি অন্য কোথাও পাওয়া যায় কি না। এখানে দামও বেশি। এক মালশা হালিম ৮০০ টাকা। মেয়ে খাবে, না কিনলে তো নয়ই।
সুইস থেকে বের হয়ে ঐতিহ্যবাহী ক্যাপিটাল ইফতার বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শাহি জিলাপি শেষ হয়ে গেছে। আটজন লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের ভেতরে ইফাদ রহমান নামের একজন বলেন, বিকেলেই ইফতার শেষ, বোঝেন অবস্থা!
ক্যাপিটাল ইফতার বাজারে দেখা যায়, এক কেজি গরুর চাপ ১০০০ টাকা ও এক কেজি খাসির চাপ ১২০০ টাকা দরে কিনছেন নাফিজ রায়হান নামের একজন উপসচিব। তিনি বলেন, সারাদিন রোজা থেকে ভালোটাই খাব। দাম নিয়ে ভাবলে কী আর সব সময় চলে? ছেলে-মেয়ে এক সাথে খাব।
ক্যাপিটাল ইফতার বাজারের ব্যবস্থাপক আবদুল আজিজ বলেন, এখানে সব কিছুই উচ্চবিত্তদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়। মানেও ভালো, দামও তেমন। এখানে সব ভিআইপিরা ইফতার কিনতে আসছেন। খুব ভালো বিক্রি হচ্ছে।
ক্যাপিটাল থেকে বের হয়ে নবাবী ভোজ নামের একটি রেস্টুরেন্টে গেলে দেখা যায়, সেখানে উপচে পড়া ভিড়। অনেকেই পরিবারসহ এসেছেন ইফতার কিনতে। বিক্রেতাদেরও বেশ ব্যস্ত দেখা যায়। রাদিতুন নাহার নামের একজন ক্রেতা বলেন, ইফতারের দাম একটু বেশি হলেও ভালো জায়গা থেকে ইফতার না কিনলে ভালো লাগে না।
নবাবী ভোজের মালিক মো. সালাম বলেন, খুব ভালো বিক্রি হচ্ছে। প্রথম দিন না বুঝতে পেরে অনেক জিনিস কম বানানো হয়ে গেছে। সেগুলো বিক্রি হয়ে গেছে। কাল থেকে সব ঠিক থাকবে। কারণ আজ বুঝে গেছি বাজার।