‘একজন গায়ক মারা গেছে, তাই ফুল নিয়া আইছি’
আট বছর বয়সী পুতুল ফুল বিক্রি করে শাহবাগে। লাল, হলুদ গোলাপ নিয়ে আজ সকাল সকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাজির সে। এখানে কেন জানতে চাইলে পুতুল বলে, ‘কালকে খবর পাইছি একজন গায়ক মারা গেছে, উনারে এইখানে (কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার) আনবে। তাই ফুল নিয়া আইছি।’
পুতুলের ছোট্ট হাতে একগুচ্ছ গোলাপ। বেশি কথা বলার সময় নেই পুতুলের। আজ সবাই ফুল নিচ্ছে। ফুল হাতেই সবাই যাচ্ছে প্রিয় গায়ক, বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীর কফিনের কাছে। প্রিয় শিল্পীকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে লাইনেও দাঁড়াতে হলো বহু মানুষকে।
সেখানেই পুতুল ব্যস্ত ছিল ফুল নিয়ে। পুতুল বলে, ‘ভালো বিক্রি হচ্ছে ফুল। ১০ টাকার গোলাপ ফুল ৪০ টাকায় বিক্রি করছি।’ পুতুল আরো বলে, ‘প্রতিদিন সব ফুল বিক্রি করে ১৫০ কিংবা ২০০ টাকা পাই। আজ সকালের মধ্যে ৮০০ টাকা পেয়ে গেলাম। এ ধরনের আয়োজন যখনই হয়, তখন শহীদ মিনারে ফুল নিয়ে সকালবেলা আসি।’
পুতুল থাকে কামরাঙ্গীরচরে।
বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীর মরদেহ শহীদ মিনারে আনা হয় আজ বেলা ১১টায়। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ তাঁকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী বাংলাদেশ সময় গতকাল মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টায় সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
আজ সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের একটি উড়োজাহাজে সুবীর নন্দীর মরদেহ ঢাকায় এসে পৌঁছে। বিমানবন্দর থেকে মরদেহ নেওয়া হয় তাঁর ঢাকার গ্রিনরোডের বাসায়। সেখান থেকে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বেলা ১১টায় তাঁর মরদেহ নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
এরপর সুবীর নন্দীর মরদেহ রামকৃষ্ণ মিশনে নেওয়ার কথা আছে। সবুজবাগে বরদেশ্বরী কালীমন্দির ও শ্মশানে সুবীর নন্দীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।