কোন এলাকায় ওয়াসার পানি বেশি অনিরাপদ, জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
ঢাকার কোন কোন এলাকায় ওয়াসার পানি সবচেয়ে বেশি অনিরাপদ তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটকারী আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদকে এই তথ্য জানাতে বলেন।
আইনজীবী তানভীর আহমেদ জানান, পানিতে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি রয়েছে এমন প্রতিবেদন যুক্ত করে তিনি একটি রিট করেন। ওই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৬ নভেম্বর রাজধানী ঢাকায় পাইপের মাধ্যমে সরবরাহকৃত ওয়াসার পানি পরীক্ষার জন্য ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এছাড়া কমিটিকে দুই মাসের মধ্যে পানি পরীক্ষা করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু পানি পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিলের পরিবর্তে বুধবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন ও কমিটির কার্যপরিধি তুলে ধরে একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
এতে ওয়াসাকে মোট ১১টি জোনে ভাগ করে পানি পরীক্ষার করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া অর্থায়ন পাওয়া গেলে চার মাসের মধ্যে পানি পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
আইনজীবী তানভীর আরো জানান, এ অবস্থায় মামলাটি বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কার কথা তুলে ধরলে আদালত কোন কোন এলাকার পানি বেশি দূষিত ও বেশি অনিরাপদ সেই সব এলাকা চিহ্নিত করে জানাতে বলেছে। এছাড়া অর্থায়ন কে করবে এবং কী পরিমাণ অর্থায়ন প্রয়োজন হবে সেটা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজুকে জানাতে বলেছেন আদালত। আদালত আগামী সোমবার এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য রেখেছেন।
গত বছরের ১১ অক্টোবর বিশ্বব্যাংক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষ অনিরাপদ উৎসের পানি পান করে। ৪১ শতাংশ পানির নিরাপদ উৎসগুলোতে রয়েছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া। ১৩ শতাংশ পানিতে রয়েছে আর্সেনিক। পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ করা পানিতে এই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৮২ শতাংশ। ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ ১৪ অক্টোবর রিট করেন। গত বছরের ৬ নভেম্বর হাইকোর্ট রিট আবেদনটির প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দুই মাসের মধ্যে পানি পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিল করতে আদেশ দেন। একইসঙ্গে নিরাপদ পানি সরবরাহে কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
চার সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ওয়াসার এমডিসহ আটজনকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।