অর্ধযুগ ধরে সম্মেলন নেই যুবলীগে
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর মেয়াদ দুই বছর। যুবলীগও এর বাইরে নয়। সংগঠনটির দুই বছরের কমিটি ছয় বছর নয় মাস পার করেছে। তবু সম্মেলনের খবর নেই। এতে নতুন নেতৃত্বও আসছে না যুবলীগে।
আগামী অক্টোবরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগেই যুবলীগের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি পাওয়ার আশা করছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এজন্য সবাই তাকিয়ে আছেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে।
অক্টোবরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তিন বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অক্টোবরেই আওয়ামী লীগের সম্মেলন হবে বলে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দুই মাস আগে জানিয়েছিলেন।
মেয়াদোত্তীর্ণ সংগঠনগুলোর সম্মেলন দ্রুত আয়োজনের বিষয়ে আওয়ামী লীগ থেকে নির্দেশনা আসবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘যেসব সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের সম্মেলন যাতে দ্রুত করে ফেলা হয় এজন্য আমরা জানাব।’
যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০১২ সালের ১৪ জুলাইয়ের কাউন্সিলে যুবলীগের চেয়ারম্যান হন ওমর ফারুক চৌধুরী। ওই কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক হন হারুন অর রশিদ।
কবে নাগাদ যুবলীগের সম্মেলন হতে পারে জানতে চাইলে ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সময় দিলেই যুবলীগের সম্মেলন হবে। আমরা সম্মেলন করতে সব সময় প্রস্তুত। আমাদের সাংগঠনিক নেত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যখনই বলবেন, তখনই আমরা আয়োজন করব।’
দলীয় নেতাকর্মীদের মতে, যুবলীগ সব সময় আওয়ামী লীগের ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করে, যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে সক্রিয় অবস্থান থাকে তাদের। আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে প্রতিদিনই কর্মসূচি নিয়ে মাঠে শক্ত অবস্থান ছিল তাদের। তবে এত দিন সম্মেলন না হওয়ায় তৃণমূল পর্যায় অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
এ দিকে সম্মেলন আয়োজনের কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না যুবলীগের নতুন নেতৃত্বপ্রত্যাশীরা। তারা রীতিমতো হতাশ। ছাত্রলীগের নেতৃত্ব থেকে বিদায় নেওয়া অনেক নেতাই যুবলীগের নেতৃত্ব পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন। কিন্তু সম্মেলন না হওয়ায় তাদের সে প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্রলীগের বিগত তিন কমিটি- মাহমুদ হাসান রিপন ও মাহফুজুল হায়দার রোটন, বদিউজ্জামান সোহাগ ও সিদ্দিকী নাজমুল আলম এবং সাইফুর রহমান সোহাগ ও এস এম জাকির হোসাইনের কমিটিতে যারা ছিলেন দুই-একজনকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক বা সদস্য করা হলেও অন্যরা আছেন সম্মেলনের আশায়।
যুবলীগের কাউন্সিলের এক বছর পর ২০১৩ সালের মে মাসের শেষের দিকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। দক্ষিণে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে সভাপতি ও ওয়াহিদুল আলম আরিফকে সাধারণ সম্পাদক এবং উত্তরে মাইনুল হোসেন খান নিখিলকে সভাপতি ও মো. ইসমাইল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলনও আটকে আছে দীর্ঘদিন ধরে।