চলন্ত বাসে নার্সকে ধর্ষণ-হত্যার বিচারের দাবিতে কিশোরগঞ্জে মানববন্ধন
কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালের সেবিকা শাহিনুর আক্তার তানিয়াকে ধর্ষণ করে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা মিছিল নিয়ে কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে হাজির হন। মানববন্ধনের কারণে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়কে আধা ঘণ্টার জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন কটিয়াদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহাব আইনউদ্দিন, জেলার সরকারি কৌঁসুলি শাহ আজিজুল হক, শ্রমিক নেতা আবদুর রহমান রুমী, যুবলীগ নেত্রী তানিয়া সুলতানা হ্যাপি এবং জেলা সিপিবি সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
বক্তারা তানিয়ার ধর্ষক ও হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন। একই সঙ্গে অবৈধ স্বর্ণলতা পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটিকে পুনর্বাসনেরও দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে নিহত তানিয়ার ভাই কফিল উদ্দিন সুমন উপস্থিত হয়ে তাঁর বোনের হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারকাজ শেষ করার আহ্বান জানান।
কটিয়াদী রক্তদান সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপজেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, কটিয়াদী নার্স অ্যাসোসিয়েশন, সচেতন মহিলা নাগরিক সমাজ ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন অংশ নিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করে।
রাজধানী ঢাকায় ইবনে সিনা হাসপাতালে কর্মরত নার্স তানিয়া গত সোমবার বিকেলে নিজ বাড়ি কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুড়ি বাহেরচর গ্রামে যাওয়ার জন্য ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে রওনা হন। সহকারীসহ বাসের চালক ও অন্যরা তাঁকে ধর্ষণ করে এবং বাসটি কিশোরগঞ্জ-ভৈরব সড়কের বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের বিলপাড় গজারিয়া জামতলী নামক স্থানে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে ওই এলাকা থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধারের পর রাত পৌনে ১১টার দিকে তানিয়াকে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে গতকাল গভীর রাতে নিহত শাহিনুর আক্তার তানিয়ার বাবা গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে বাজিতপুর থানায় মামলা করেন।
এ ঘটনায় চালক নূরুজ্জামান ও হেলপার লালনসহ বকুল, খোকন ও রফিক নামের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ বুধবার আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।