প্রবাসী স্বামীর টাকা চেয়ে প্রাণ গেল ফৌজিয়ার
শ্বশুরবাড়ির কাছে প্রবাসী স্বামীর পাঠানো টাকা চেয়েছিলেন পাবনার বেড়া উপজেলার গৃহবধূ ফৌজিয়া খাতুন (৩২)। এর জের ধরে আগুনে ঝলসে দেওয়া হয় তাঁকে। সাত দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে শেষ পর্যন্ত হার মানতে হলো ফৌজিয়াকে।
মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফৌজিয়া খাতুন ওরফে শজি খাতুন।
আমিনপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম মঈনুদ্দিন ফৌজিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ফৌজিয়া বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানাধীন তালিমনগর গ্রামের ছুরমান মণ্ডলের স্ত্রী। ঘটনার পর মামলা করা হলে পুলিশ অভিযুক্ত ফৌজিয়ার ননদ শামেলা খাতুনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ জানায়, অগ্নিদগ্ধে নিহত ফৌজিয়া খাতুনের স্বামী ছুরমান মণ্ডল কয়েক বছর ধরে মালয়েশিয়ায় থাকেন। সেখান থেকে তিনি প্রতি মাসে তাঁর বোন শামেলা খাতুনের ব্যাংক হিসাবে টাকা পাঠান। ননদ শামেলা খাতুন সংসার খরচ বাবদ ফৌজিয়াকে মাত্র তিন হাজার টাকা করে দিতেন। অল্প টাকায় সংসার চালানো সম্ভব না হওয়ায় শাশুড়ি, ননদ, ভাশুর ও জায়ের সঙ্গে কলহ দেখা দেয় ফৌজিয়া খাতুনের।
এ নিয়ে গত ৯ মে বৃহস্পতিবার ভোরে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে শাশুড়ি, ননদ ও ভাশুরের বউ মিলে ফৌজিয়া খাতুনের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
ফৌজিয়ার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে ফৌজিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করেন চিকিৎসক। সেখানে সাত দিন অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে মারা যান ফৌজিয়া খাতুন।
এ ঘটনায় নিহত ফৌজিয়ার বাবা ফজিবর রহমান বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ননদ শামেলা খাতুনকে গ্রেপ্তার করলেও অভিযুক্ত অন্যদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি।