রফিকুলের জবানবন্দি, ৩ আসামি কারাগারে
কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর নার্স শাহীনূর আক্তার তানিয়াকে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি রফিকুল ইসলাম। আজ বুধবার বিকেলে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আল মামুনের খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন স্বর্ণলতা পরিবহনের কটিয়াদি উপজেলার কাউন্টার মাস্টার রফিকুল।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সারোয়ার জাহান জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জবানবন্দি গ্রহণের পর আসামি রফিকুল ইসলামকে বিচারকের নির্দেশে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে গ্রেপ্তার তিন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এ ছাড়া আট দিনের রিমান্ড শেষে অন্য দুই আসামি খোকন মিয়া ও বকুলকেও বিচারক আল মামুনের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়। খোকন মিয়া ও বকুলের কাছ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে সারোয়ার জাহান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। দ্রুতই বাকি আসামিদের আটক করে অভিযোগপত্র দেওয়া সম্ভব হবে।
এর আগে একই আদালতে গতকাল অন্যতম অভিযুক্ত চালকের সহকারী লালন মিয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ ছাড়া বাসচালক নূরুজ্জামান নূরু গত ১১ মে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
গত ৮ মে নার্স তানিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় আটক পাঁচ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আট দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন জেলার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক আল মামুন। নূরুজ্জামান নূরু ও লালন মিয়াও বর্তমানে কারাগারে আছেন।
ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স তানিয়া গত ৬ মে বিকেলে নিজ বাড়িতে আসার জন্য ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে করে রওনা হন। বাসটি কিশোরগঞ্জ-ভৈরব সড়কের বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের বিলপাড় গজারিয়া জামতলী নামক স্থানে পৌঁছার পর বাসের চালক ও সহকারীসহ অন্যরা শাহীনূরকে ধর্ষণ করে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয়। ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওই এলাকা থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধারের পর রাত পৌনে ১১টার দিকে তানিয়াকে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
পরের দিন বিকেলে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নার্স শাহীনূর আক্তার তানিয়ার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে তানিয়ার বাবা গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে বাজিতপুর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সারোয়ার জাহান ৮ মে দুপুরে পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। আসামিরা হচ্ছেন বাসচালক নূরুজ্জামান নূরু, চালকের সহকারী লালন মিয়া, রফিকুল ইসলাম রফিক, খোকন মিয়া ও বকুল মিয়া। শুনানি শেষে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক আল মামুন আট দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।