যৌন হয়রানি বন্ধে ভৈরবে ইউএনওর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
গণপরিবহনে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি বন্ধে চালক, হেলপারসহ যাত্রীদের সচেতনতা তৈরিতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত সাদমীন। তিনি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনিসুজ্জামানকে সঙ্গী করে তাঁর সরকারি মোবাইল ফোন নম্বরসহ নারী নির্যাতনবিরোধী স্লোগানযুক্ত স্টিকার বাস, অটোরিকশা, ইজিবাইকের সামনে সাঁটিয়ে দিচ্ছেন।
‘নারীকে সম্মান করুন, সুস্থ সুন্দর সমাজ গড়ুন’ এই স্লোগান লিখে অনুরোধ করা হয়েছে ভৈরব উপজেলার যেকোনো পথে, যেকোনো বাহনে চলাচলের সময় নারী নির্যাতন ও যৌন হয়রানি রোধে তাৎক্ষণিক উল্লেখিত মোবাইল ফোন নম্বরে কল করে জানাতে।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের ভৈরব বাসস্ট্যান্ড দুর্জয় মোড় এলাকায় ওই কর্মসূচি পালনকালে কথা হয় ইউএনও ইসরাত সাদমীনের সঙ্গে। এ সময় তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী গণপরিবহনে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও নির্যাতন বেড়ে গেছে। যার অধিকাংশের সঙ্গেই ওইসব গণপরিবহনের চালক, হেলপাররা জড়িত। অর্থাৎ রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে কিছু সংখ্যক অপরাধী। তাই তাদের সচেতন করতে আমাদের এই উদ্যোগ।
এই প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনিসুজ্জামান জানান, সোমবার বিকেল থেকে আমরা এই কর্মসূচি শুরু করেছি। আপাতত দুই হাজার স্টিকার সাঁটানো হবে। সেই সঙ্গে চালকদের সাথে কথা বলে তাদের মানসিকতার উন্নয়ন ঘটানোর চেষ্টা হচ্ছে।
কর্মসূচি চলাকালে বাসযাত্রী আকলিমা বেগম ও শাহীনূর হোসেন ইউএনওর এই কর্মসূচিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, দেশের প্রতিটি উপজেলায় অনুরূপ কর্মসূচি গ্রহণ করা উচিত।
স্থানীয় রফিকুল ইসলাম মহিলা অনার্স কলেজের সিনিয়র প্রভাষক সত্যজিৎ দাস ধ্রুব জানান, উপজেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগটি বর্তমান সময়ের জন্য খুবই উপযোগী ও প্রশংসার দাবিদার। তবে সবার আগে যেটি দরকার, সেটি হলো গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দায়িত্বশীল ও মানবিক হয়ে ওঠা।
বাসচালক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, কিছু সংখ্যক অপরাধীর কারণে আজকে সমস্ত গণপরিবহন সেক্টর বিতর্কিত ও লজ্জায় ডুবে আছে। তিনি এ ক্ষেত্রে গণপরিবহন মালিক ও নেতাদের চালক-হেলপারদের চরিত্র বিবেচনা করে চাকরি দেওয়ার আহ্বান জানান।