নওগাঁয় স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষকের ধান কাটা কর্মসূচি
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় স্বেচ্ছাশ্রমে অসহায় বর্গাচাষি আবদুর রাজ্জাকের ৬৩ শতাংশ জমির ধান কেটে দিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও গণমাধ্যম কর্মীরা। শনিবার সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত উপজেলার উমার ইউনিয়নের অন্তর্গত ধামইরহাট-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কের পূর্ব পার্শে বিহারীনগর মাঠে এ ধান কাটা হয়।
এ ব্যাপারে বেড়াডাঙ্গা গ্রামের বর্গাচাষি আবদুর রাজ্জাক বলেন, অনেক কষ্ট ও ধার-দেনা করে অন্যের জমিতে তিনি ইরি ধান রোপন করেন। ধান পাকলেও শ্রমিক সংকট এবং অধিক শ্রমের মূল্য দাবি করায় তিনি ধান কাটতে পারেননি। ধান কাটতে না পারায় একপর্যায়ে তিনি অসহায় হয়ে পড়েন। বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজা স্থানীয় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে সবাই অসহায় কৃষকদের স্বেচ্ছায় ধান কাটা কর্মসূচি গ্রহণ করেন। এ কর্মসূচির আলোকে ওই বর্গাচাষির ধান কাটা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজা বলেন, সবাই মিলে মাঠে যাই, ধান কাটি ধান তুলি- এ স্লোগানকে সামনে রেখে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে অসহায় কৃষকদের ইরি ধান কাটা কর্মসূচি শুরু করা হয়। তাঁর ডাকে স্থানীয় চকময়রাম সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম খেলাল-ই-রব্বানী, গণমাধ্যমকর্মী হারুন আল রশীদ, মানবসেবা সংগঠনের সভাপতি রাসেল, প্রাণের হাসির সভাপতি আবু সাঈদ, দেখাবো আলোর পথের সভাপতি মেহেদী হাসান, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী এ কাজে ঝাপিয়ে পড়ে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজা আরো বলেন, এ উপজেলায় ধান কাটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৭ থেকে ১০টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। এলাকার সুধী মহল এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
চলতি বছর ধামইরহাট উপজেলায় প্রায় ১৬ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো ধান রোপন করেছে কৃষকরা। সব ধান পাকলেও শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষক ধান কাটতে পারছে না। তাছাড়া প্রতি মণ ধান কাটতে ১৫ থেকে ১৮ কেজি ধান দাবি করছে শ্রমিকরা। তাছাড়া বাজারে ধানের মূল্য ৬২০ থেকে ৬৩০ দরে কেনা বেচা হচ্ছে। এতে কৃষকের খরচ না ওঠার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে ক্ষেতের ধান কাটতে পারছে না কৃষকরা।