নরসিংদীতে পুলিশের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, গ্রেপ্তার ৬
নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় দায়িত্ব পালনের সময়ে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ সদস্যদের বেধরক মারপিট করেন তারা। পুলিশের সরকারি পোশাকও ছিড়ে ফেলেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
হামলায় চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বরত উপপরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ কুমার দাশসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রাজনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর আজ রোববার বিকেলে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া অন্য পাঁচজন হলেন ছাত্রলীগ কর্মী সুমন মিয়া (২৫), শফিকুল ভূইয়া (২৪), জাহির (১৯), শুভ মিয়া (২০) ও রাজন (২৭)। তাঁরা সবাই চরসিন্দুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
পলাশ থানা সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কয়েকজন পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর নতুন ব্রিজে ঘুরতে আসেন। ওই সময় তারা ব্রিজের এক পাশে বসে তাস খেলছিলেন। এ সময় হৃদয় নামের স্থানীয় এক যুবক তাদের তাস খেলতে বারণ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে কালীগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা ছাত্রলীগ সদস্যরা বিষয়টি পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রাজনকে জানান। এরই জেরে শেখ মোহাম্মদ রাজনের লোকজন হৃদয়কে মারপিট করতে থাকেন। খবর পেয়ে চরসিন্দুর ক্যাম্পের পুলিশের একটি দল সেখানে যায় এবং উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানায়। কিন্তু তারা পুলিশের কথা অমান্য করে দুইপক্ষে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। এ সময় রাজনের শরীরে লাঠির আঘাত লাগে। এতে তাঁর সমর্থকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে ছাত্রলীগ নেতা ও তাঁর সমর্থকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তাঁরা পুলিশ সদস্যদের মারপিট করেন। একই সঙ্গে পুলিশের গায়ে থাকা ইউনিফর্ম ছিড়ে ফেলেন।
হামলায় আহত হন চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (আইসি) এসআই প্রদীপ কুমার দাশ, কনস্টেবল জাহিদ, নাদিম, গাইয়ুম ও নায়েক আলামিন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এসআই প্রদীপ কুমার দাশ বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে পলাশ মডেল থানায় মামলা করেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রোববার দুপুরে পুলিশ পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোহাম্মদসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এসআই প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, চরসিন্দুর ব্রিজ এলাকায় দুইপক্ষের মারপিট হচ্ছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে যাই। দুই পক্ষকেই শান্ত থাকার আহ্বান জানাই। এরই মধ্যে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অতর্কিত পুলিশের ওপর হামলা চালায় এবং পুলিশের ইউনিফর্ম ছিড়ে ফেলেন। এ সময় তাদের হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়।
বিষয়টি জানতে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদকে ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন মোল্লা বলেন, পুলিশকে মারপিট ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগে পলাশ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।