তাবলিগ জামাতের একপক্ষের হামলায় প্রাণ গেল সেই রাজনের
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলায় প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হয়ে ২২ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তাবলিগ জামাতের কর্মী আবদুর রহিম রাজন (২৭) মারা গেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কটিয়াদি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শামা মো. ইকবাল হায়াৎ জানান, আজ সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে তিনি মারা যান।
তাবলিগ জামাতের দুইপক্ষের দ্বন্দ্বের জের ধরেই এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশসহ স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রাজন ছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলা তাবলিগ জামাত মার্কাজের একজন সক্রিয় কর্মী। গত ১৯ মে রাতে কটিয়াদি উপজেলা সদরের কলামহল জামে মসজিদে তারাবির নামাজ শেষে কটিয়াদি সদরে মধ্যপাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে ফিরেন। পরে মসজিদে অবস্থানরত তাবলিগ জামাতের প্রয়োজনে রাত পৌনে ১১টার দিকে পুনরায় বাসা থেকে বের হয়ে মসজিদের উদ্দেশে রওনা হন। বাসা থেকে বের হয়ে কিছুদূর এগুতেই পাঁচ যুবক রাজনকে ধরে শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিলে তিনি গুরুতর দগ্ধ হন। এ সময় তিনি চিৎকার করে মাটিতে গড়াগড়ি দিতে থাকেন এবং একপর্যায়ে পাশের একটি ড্রেনে ঝাপিয়ে পড়েন। আর্ত চিৎকার শুনে তাঁর পরিবার ও পাড়া-প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে সে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসকরা রাজনের শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ার কথা বলে সংকটাপন্ন অবস্থার কথা জানান।
অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় নেওয়ার সময় স্বজনদের কাছে রাজন তাঁর শরীরে আগুন লাগানোর বিস্তারিত বর্ণনা দেন। তাঁর সূত্র ধরে একদিন পর ২১ মে রাজনের মামা মামুনুর রশীদ বাদী হয়ে কটিয়াদি থানায় পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। পরে পুলিশ মাহমুদুল হাসান ও সোহেল মিয়া নামের এজাহারভুক্ত দুজনকে আটক করে। বর্তমানে ওই দুজন কিশোরগঞ্জ কারাগারে আছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাজনের সঙ্গে অবস্থান করা তাবলিগ কর্মী এস.এম সোহেল রানা জানান, রাজন ছিল ভারতের মাওলানা সাদপন্থী তাবলিগ কর্মী। তাই প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে পকিস্তানের সমর্থক মাওলানা জুবায়েরপন্থীরা তাঁকে নৃশংসভাবে পুড়িয়ে হত্যা করেছে।
আবদুর রহিম রাজন কটিয়াদি সদরের পূর্বপাড়া মহল্লার মোস্তফা মিয়ার ছেলে। তিনি বিবাহিত এবং এক শিশু ছেলের জনক ছিলেন।