‘বাক ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের নজর দেওয়া উচিত’
রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্তি, সুশীল সমাজকে সুযোগ দেওয়া, বাক ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, নারীদের অবস্থা এবং শ্রমের মানোন্নয়নের মতো বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
গত ১০ ও ১১ জুন বাংলাদেশ সফরে এসে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেন ইইউর মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি অ্যামন গিলমোর।
এ সময় গিলমোর আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ইইউ।’
এ অঞ্চলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য বাংলাদেশ এক গুরুত্বপূর্ণ দেশ বলেও মন্তব্য করেন সংস্থাটির বিশেষ এই প্রতিনিধি।
গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গিলমোর জানান, ইইউ ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পাশাপাশি ‘অস্ত্র ছাড়া সবকিছু (এভরিথিং বাট আর্মস)’ নীতির আলোকে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শ্রম অধিকারসহ মানবাধিকার এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
ইইউর মানবাধিকারবিষয়ক কোনো বিশেষ প্রতিনিধির প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফর এ দেশের সরকার ও সুশীল সমাজের সঙ্গে ইইউর সম্পৃক্ত থাকার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ইইউর মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি গিলমোর কক্সবাজার সফর এবং সেখানে রোহিঙ্গা ও তাদের আশ্রয় দেওয়া স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া প্রসঙ্গে গিলমোর বলেন, ‘বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের উদারভাবে আশ্রয় দেওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কৃতজ্ঞ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন হিসেবে তারা এ সংকট সমাধানে কাজ করছেন।’
রোহিঙ্গাদের স্থানীয় জনগোষ্ঠীসহ বাংলাদেশের আতিথেয়তা বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য এক সংহতির উদাহরণ বলে মন্তব্য করেন গিলমোর।
এ গুরুত্বপূর্ণ মানবিক কাজে বাংলাদেশকে সমর্থন দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্তরে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এবং বাংলাদেশে থাকা উদ্বাস্তু ও স্থানীয়দের আর্থিক সহযোগিতায় ২০১৭ থেকে ১০৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানায় ইইউ।
কক্সবাজার সফরকালে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন এবং রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সদস্যের পাশাপাশি শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন অ্যামন গিলমোর। বাংলাদেশ সফর শেষে মিয়ানমার গিয়ে দেশটির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করবেন তিনি।
শ্রমের মানোন্নয়নসহ মানবাধিকারের বেশ কিছু ইস্যু নিয়েও রাজধানীতে কয়েকটি বৈঠক করেন অ্যামন গিলমোর। শ্রমের মানোন্নয়নে বাংলাদেশের জরুরিভাবে উন্নতি করা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ঢাকায় অবস্থানকালে আইন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা, নির্বাচন, বাক ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা, নারী ও শিশুদের অধিকার, জাতিসংঘে মানবাধিকারবিষয়ক সহযোগিতা, সংখ্যালঘুদের অধিকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নসহ আরো বিষয় নিয়ে কথা বলেন ইইউর বিশেষ এই প্রতিনিধি।
বাংলাদেশ সফরে এসে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সমন্বয়ক ও আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর, ইউএনএইচসিআর, আইওএম, ইউএনডিপি, ইউনিসেফ, ইউএনএফপিএ ও ইউএন উইমেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর এবং এনজিও ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশেষ প্রতিনিধি অ্যামন গিলমোর।