শেরপুরে গাছে বেঁধে অন্তঃসত্ত্বাকে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল
শেরপুরের নকলা উপজেলায় গাছে বেঁধে ডলি খানম (২২) নামের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের একটি ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় জেলাজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় গতকাল বুধবার নাসিমা আক্তার নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আদালত আগামী ১০ দিনের মধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) এ ব্যাপারে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ১০ মে নকলার কায়দা গ্রামে চন্দ্রকোনা কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্রী গৃহবধূ ডলিকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। পরে আহত ডলিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তাঁর গর্ভপাত ঘটে। নির্যাতনের ফলেই ডলির গর্ভপাতের ঘটনা ঘটেছে বলে পরিবারের দাবি।
এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত দুটি মামলা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গত ৩ জুন শেরপুরের আমলি আদালতে তিন ভাই ও ভাবিসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে প্রথম মামলাটি করেন ডলির স্বামী শফিউল্লাহ। পরে গতকাল একই আদালতে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে দ্বিতীয় মামলাটি করেন ডলি নিজে।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ মামলা ও নির্যাতিতার বরাত দিয়ে জানান, বেশ কিছুদিন ধরে জমি নিয়ে ডলির স্বামী শফিউল্লাহর সঙ্গে তাঁর বড় ভাইদের বিরোধ চলে আসছিল। এরই মাঝে গত ১০ মে সকালে বড় ভাই আবু সালেহ শফিউল্লাহর দখলি জমিতে জোর করে ধান কাটতে যান। সে সময় শফিউল্লাহ বাধা দিলেও ভাইয়ের পক্ষে লোকজন বেশি থাকায় পিছু হটে আসেন।
পরে শফিউল্লাহর তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ডলি ধান কাটতে বাধা দিতে গেলে আবু সালেহর সঙ্গে থাকা সলিমুল্লাহ, নেছার উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী লাকী তাঁকে আটকে প্রথমে তাঁর ওপর মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেয়। পরে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয় ডলিকে।
পরে আহত ডলিকে উদ্ধার করে প্রথমে নকলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে শেরপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১০ থেকে ২২ মে পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এ সময় তাঁর গর্ভপাতের ঘটনা ঘটে। শেরপুর জেলা হাসপাতালের ছাড়পত্রেও তাঁর গর্ভপাতের কথা উল্লেখ করা হয়। অভিযুক্ত অন্যরা বর্তমানে পলাতক রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।