গাজীপুরে বিএনপি নেতার ভোট বর্জন, আ.লীগ প্রার্থীর জয়
গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট রীনা পারভীন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আবু নাসার উদ্দিন এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট রীনা পারভীন নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৩ হাজার ৮৬৫ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা ইজাদুর রহমান চৌধুরী ঘোড়া প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন তিন হাজার ৮০৭ ভোট।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে মো. রিয়াজ উদ্দিন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাসিনা সরকার নির্বাচিত হয়েছেন।
দুই প্রার্থীর ভোট বর্জন
সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী, বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মো. ইজাদুর রহমান মিলন চৌধুরী এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী হাবিবুর রহমান ভোট বর্জন করেছেন। মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ চলাকালে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন এবং পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ইজাদুর রহমান মিলন অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার সকালে তিনি ভবানীপুর ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি দেখতে গিয়ে দেখেন তাঁর এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। অনুরোধ করার পরও এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন তিনি। পরে সাড়ে ৯টার দিকে তিনি নিজের ভোট দিতে বাড়ির পাশের ভোট কেন্দ্রে গেলে সেখানে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কর্মীরা তাঁকে বাধা দেন। তাঁদের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ভোট না দিয়ে একপর্যায়ে নিরাপত্তাহীনতার কারণে তিনি একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন।
ইজাদুর রহমান মিলন আরো জানান, নির্বাচনী এলাকার অন্তত ৫০টি কেন্দ্র থেকে তাঁর নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর পর পরই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মী-সমর্থকরা তাঁর নেতাকর্মীদের পিটিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতা চেয়েও প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এর আগে সোমবার রাতে তিনি পুলিশ দিয়ে নিজ বাসায় অবরুদ্ধ ছিলেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেন, এই মুহূর্তে নির্বাচনে থাকার মতো পরিবেশ নেই। আওয়ামী লীগ প্রার্থী আমার শতভাগ বিজয় নিশ্চিত দেখে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমার কর্মী-সমর্থকদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। জনগণের সমর্থন আমার পক্ষে থাকলেও তারা ভোট দিতে পারছে না। তাই হতাশ হয়ে এবং কর্মীদের রক্ষার্থে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন বর্জন করলাম। এ সময় তিনি গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন পুনরায় অনুষ্ঠানের দাবি করেন।
এদিকে বিকেলে ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী (চশমা প্রতীক) হাবিবুর রহমান প্রায় একই অভিযোগ করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, সকাল থেকে তাঁর কর্মী-সমর্থকরা নিজের ভোট দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে যান। এ সময়ে তাদের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হলেও গোপন কক্ষে গিয়ে ভোটারদের ভোট দিতে না দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয় একই পদে প্রতিদ্বন্দ্বী অপর প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের সামনে এসব ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁর কর্মীদের বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন। তাঁর শতভাগ বিজয় নিশ্চিত দেখে পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষ প্রার্থী ও তাঁর কর্মীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন পুনরায় অনুষ্ঠানের দাবি করেন।
এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবু নাসার উদ্দিন বলেন, কোথাও কোনো গোলযোগের খবর পাওয়া যায়নি। গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটকেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়া বা তাদের মারধর করার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেননি।