মাদারীপুরে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা, যুবলীগ নেতাকে হত্যা
মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী ও সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের ছোট ভাইয়ের সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
বুধবার দুপুর ১টার দিকে মাদারীপুর পৌর শহরের সবুজবাগ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত জসিম গৌড়া পলাতক।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, দুপুর ১টার দিকে পৌর শহরের সবুজবাগ এলাকায় নদীর পাড় দিয়ে যাচ্ছিলেন নৌকা প্রতীকের সমর্থক ও পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য এরশাদ মুন্সী (২২)। এ সময় ওত পেতে থাকা বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক ও যুবলীগ কর্মী জসিম গৌড়া তাঁর দলবল নিয়ে এরশাদকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেন। এরশাদের চিৎকার শুনে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরশাদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। এরশাদ সবুজবাগ এলাকার বেলায়েত মুন্সীর ছেলে। তিনি গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কাজল কৃষ্ণদের সমর্থক ছিলেন। নির্বাচনে জসিম গৌড়া বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে বিজয়ী চেয়ারম্যান ও সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের ছোট ভাই অ্যাডভোকেট ওবাইদুর রহমান খানের সমর্থক-কর্মী। তবে এর আগেও এরশাদ ও জসিম গৌড়ার মধ্যে স্থানীয় প্রভাব নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল বলে জানা যায়।
ঘটনার পর মাদারীপুর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও র্যাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওই এলাকাসহ আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন, নিহতের ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, তা এখনো বলা যাচ্ছে না। তবে এ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। কোন কারণে খুন হয়েছে, এখন তা বলা যাচ্ছে না। তবে যেই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন, তদন্ত সাপেক্ষে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
তবে নিহতের মামা দাবি করা যুবলীগ নেতা কাওছার হোসেন অভিযোগ করে জানান, এরশাদ নৌকার সমর্থক হওয়ায় জসিম গৌড়া তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এরশাদকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। জসিমের বিরুদ্ধে ডাকাতি, খুনসহ একাধিক মামলা রয়েছে। নির্বাচনে আমাদের হত্যা করতে পারে, এই বিষয়টি পুলিশ সুপারকে বারবার বলা হলেও তাকে গ্রেপ্তার করেনি। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা জসিমসহ খুনিদের বিচার দাবি করি।
মঙ্গলবার মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হন সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের ছোট ভাই অ্যাডভোকেট ওবাইদুর রহমান খান কালু, অন্যদিকে নৌকা প্রতীক নিয়ে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে। নির্বাচনে কোনো বড় ধরনের সহিংসতা না হলেও নির্বাচন পরিবর্তী সহিংসতায় এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে।