রাজশাহীতে গৃহবধূকে ধর্ষণের পর কুপিয়ে হত্যা
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় দুই সন্তানের জননী আসমা বেগমকে ধর্ষণের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার মোহনপুর থানা পুলিশ আসমার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মাসুদ রানা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
এলাকাবাসী জানায়, মোহনপুরের ফুলশো গ্রামের চান মোহাম্মদের সঙ্গে প্রায় ২৬ বছর আগে একই উপজেলার উষায়ের হাটরা গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিনের মেয়ে আসমা বেগমের (৪৫) বিয়ে হয়। দুই সন্তানের জন্মের পর স্বামী চান মোহাম্মদ আসমা বেগমকে তালাক দেন। ওই সময় থেকে আসমা বেগম ছেলে-মেয়েকে নিয়ে উষায়ের হাটরা গ্রামে বাবার বাড়িতে থাকতেন। পরবর্তীতে আসমা বেগম পাশের তীলাহারি গ্রামের হাসেম আলীর ছেলে বাবুল ইসলামকে দ্বিতীয় বিয়ে করলেও তিনি হাটরা গ্রামে বাবার বাড়িতেই থাকতেন। তবে স্বামী বাবুল হোসেন সপ্তাহে দুদিন হাটরা গ্রামে আসমার বাড়িতে যেতেন।
এদিকে মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর থেকে আসমা বেগম তাঁর একমাত্র ছেলে মাসুদ রানাকে (২২) নিয়ে হাটরা গ্রামেই বসবাস করতেন।
মাসুদ রানা জানান, শুক্রবার রাজমিস্ত্রির কাজ শেষে সন্ধ্যা ৭টায় বাড়িতে ফিরে মায়ের কাছ থেকে খাবার খেয়ে হাটরা গেডির মোড়ে যান তিনি। রাত ৯টার সময় বাড়ি ফিরে মাকে দেখতে না পেয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। শনিবার সকাল ৮টার দিকে হাটরা গ্রামের আন্না ও রাঙ্গা নামে দুই শিশু উষায়ের হাটরা গ্রামের ডাঙ্গা বিলে ছাগল চড়াতে গিয়ে আসমা বেগমের লাশ দেখতে পান। তারা গ্রামে ফিরে বিলে লাশ পড়ে আছে বলে চিৎকার করতে থাকে।
স্থানীয়রা বিলে গিয়ে আসমা বেগমের বিবস্ত্র লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। তারা লাশের কাছে পড়ে থাকা কাপড় দিয়ে নিহতের শরীর ঢেকে দেয়।
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ জানান, আসমা বেগমের লাশ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি ভাঙ্গা মোবাইল ফোন ও একটি খালি টাইগারের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। গৃহবধূর মুখমণ্ডল ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শুক্রবার রাতের কোনো এক সময় ধর্ষণের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের ছেলে মাসুদ রানাসহ পরিবারের সদস্যদের দাবি, গৃহবধূ আসমা বেগমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ বিলে ফেলে রাখা হয়েছে।
রাজশাহী জেলা পুলিশের সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব ও মোহনপুর থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
অপরদিকে, শনিবার সকালে মোহনপুরের দুর্গাপুর গ্রামের বাড়ি থেকে গরিবউল্লাহর স্ত্রী আনোয়ারা বেগমের (৪৮) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রতিবেশী ও পরিবারের দাবি, আনোয়ারা বেগম মানসিক রোগী ছিলেন। নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কোনো অভিযোগ না থাকায় পুলিশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই আনোয়ারা বেগমের লাশ দাফনের অনুমতি দিয়েছে।