মায়ের পরকীয়ায় সংসার ভাঙছে মেয়ের
স্বামীর মৃত্যুর পর বিবাহিত আরেক ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন ৪৫ বছর বয়সী এক নারী। এজন্য রাজধানীর মিরপুরে ওই নারীর বাসায় নিয়মিত যেতেন ঠিকাদার মো. ফরিদুল ইসলাম (৩৯)। এসব বিষয়ে জানতেন ওই নারীর বিবাহিতা মেয়েও। সেই ফরিদ আপত্তিকর কিছু ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ায় মেয়েটিকে স্বামীর বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন শ্বশুর।
এ ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে বাড্ডা থানায় মামলা করেন ওই নারী। ব্ল্যাকমেইল করা ঠিকাদার মো. ফরিদুল ইসলামকে রাজধানীর বারিধারার ডিওএইচএস এলাকা থেকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ বুধবার একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম ও সিকিউরিটি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগরে তিন মেয়েকে নিয়ে থাকেন ফরিদুল ইসলামের স্ত্রী। ঢাকায় ফেটেক্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করায় ফরিদ থাকতেন মিরপুরের পশ্চিম কাজীপাড়ার উকিলবাড়ি এলাকার বসুন্ধরা লেনে। ওই নারী থাকতেন মিরপুরের ১ নম্বর সেকশন এলাকায়। স্বামীর মৃত্যুর পর কোনো একভাবে ফরিদের সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় হয়। এক সময় তাঁদের মধ্যে মুঠোফোনে কথা বলা শুরু হয়। এরপর ভিডিও কলে কথা বলা চলতে থাকে। ভিডিও কলে কথা হওয়ার সুবাদে তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত মুহূর্ত বিনিময় হয়। কৌশলে সেসব ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি সংরক্ষণ করে রাখেন ফরিদ। একপর্যায়ে ওই নারীর বাসায় যাওয়া শুরু করেন ফরিদ। ওই নারীর সঙ্গে আর্থিক লেনদেনও করেন। এসব বিষয়ে জানতেন ওই নারীর সদ্য বিবাহিতা মেয়েও।
মাস খানেক আগে ওই নারী মিরপুর ছেড়ে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় চলে যান। সেখানে যাওয়ার ফলে ফরিদের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ে। সব সময় দেখা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হন ফরিদ। একপর্যায়ে ওই নারীর আপত্তিকর মুহূর্তের কিছু ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এর কিছুদিন পর ওই নারীর মেয়ের শ্বশুর ও আরো কিছু পরিচিত মানুষের কাছে সেসব আপত্তিকর ছবি পাঠান ফরিদ। বেয়াইনের সেসব ছবি দেখে অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূকে বাড়ি থেকে বের করে দেন শ্বশুর। এমনকি স্বামীর সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি।
মেয়ের সংসার ভাঙার উপক্রম হওয়ায় ওই নারী ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ও সিকিউরিটি বিভাগের শরণাপন্ন হন। তাদের পরামর্শে ডিজিটাল নিরাপত্তা ও পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে বাড্ডা থানায় মামলা করেন। এরপর গতকাল মঙ্গলবার রাতে বারিধারা ডিওএইচএস এলাকা থেকে ফরিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সাইবার ক্রাইম ও সিকিউরিটি বিভাগের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা আজ বুধবার এনটিভি অনলাইনকে পুরো ঘটনা জানান।
সাইবার ক্রাইম ও সিকিউরিটি বিভাগের সিনিয়র সহকারী কমিশনার সাঈদ নাসিরুল্লাহ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আসামিকে আমরা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। ওই নারীকে সব সময়ের জন্য কাছে পেতে ঠিকাদার ফরিদ তাঁকে ব্ল্যাকমেইল করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে তিনি আমাদের জানিয়েছেন। তবে একজনের ছবির কারণে আরেকজনের সংসার ভাঙবে, এটা কাম্য নয়। সেজন্য আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে ছবি বা ভিডিও বিনিময়ের ক্ষেত্রে।’