অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, কথিত সাংবাদিক গ্রেপ্তার
মোটর সাইকেল চালক মনিরুল ইসলামকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে আমিনুল ইসলাম ইমন নামের কথিত এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে ইমনকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নুরুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে জানান, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে ‘দৈনিক দিন প্রতিদিন’ পত্রিকার কথিত সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম ইমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আজ তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মামলার পর থেকেই আমরা আমিনুল ইসলাম ইমনকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান পরিচালনা করে আসছিলাম। শুক্রবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। অপহরণকারীদের একটা বড় সিন্ডিকেট রয়েছে। এরা সারা দেশেই সক্রিয়। যেমন, মুক্তিপণের টাকা বিকাশে না পেয়ে চক্রটি ভুক্তভোগীর নিজ জেলায় একজনের কাছে টাকা পৌঁছে দিতে বলে।’
নুরুল ইসলাম আরো বলেন, ‘এর আগে এ ঘটনায় ইমনের সঙ্গী চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য গোকুল চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার জবানবন্দির ভিত্তিতেই আমরা কথিত সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছি। তারা উভয়ই এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।’
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২ জুলাই রাতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশ থেকে অপহরণের শিকার হয়েছিলেন মোটর সাইকেল চালক মনিরুল ইসলাম। চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য গোকুল চন্দ্র রায় এবং কথিত সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম ইমন মনিরুল ইসলামকে অপহরণ করে রাজধানীর কলেজগেট এলাকায় আটকে রেখে তার পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
অপহরণকারীরা বিকাশের মাধ্যমে এ মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করতে বলেছিল। কিন্তু রাত গভীর হওয়ায় মনিরুলের পরিবার বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারেনি। পরে অপহরণকারীরা মনিরুলের পরিবারকে তাদের নিজ জেলা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়ীয়া ইউনিয়নের নাথপুর গ্রামের লক্ষণ কাপালীর কাছে মুক্তিপণের টাকা পৌঁছে দিতে বলে। মনিরুলের আত্মীয়রা লক্ষণ কাপালীর কাছে না গিয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানান।
অভিযোগ পেয়ে মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ রাজধানীর কলেজ গেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যকে আটক করে। তবে সঙ্গে থাকা কথিত সাংবাদিক ইমন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এ সময় পুলিশ মনিরুল ইসলামকে মোটরসাইকেলসহ উদ্ধার করে।
৩ জুলাই বিকেলে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ আটককৃত গোকুল চন্দ্র রায়কে শেরেবাংলা নগর থানায় হস্তান্তর করে। ওই দিনই মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য গোকুল ও কথিত সাংবাদিককে আসামি করে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় গোকুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এরপর থেকেই মামলার অপর আসামি ইমনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালায় পুলিশ।