ছাত্রকে বলাৎকার : মাদ্রাসাশিক্ষকের বিচার শুরু
এক শিশুকে বলাৎকার করার অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষক মো. ফয়সালের (২২) বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. মারুফ চৌধুরী এ আদেশ দেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আনোয়ারুল কবির বাবুল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আজ আদালতে এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ছিল। কিন্তু আসামিপক্ষ কোনো অব্যাহতির আবেদন না করায় বিচারক আসামি ফয়সালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। শুনানির সময় আসামি আদালতে হাজির ছিলেন।
আনোয়ারুল কবির বাবুল বলেন, গত বছরের ১১ আগস্ট সাভার মডেল থানায় ‘ফাইজুল উলুম কওমি মাদ্রাসার’ শিক্ষক মো. ফয়সালের বিরুদ্ধে বলাৎকারের ঘটনায় মামলা করেন শিশুটির মা। পরে এ ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষক মো. ফয়সালকে গ্রেপ্তার করে সাভার থানা পুলিশ। দীর্ঘ ৯ মাস কারাগারে থাকার পরে আসামি ফয়সাল ঢাকার ৯ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থেকে জামিন পান।
বলাৎকারের শিকার ওই শিশুর মা তাঁর এজাহারে উল্লেখ করেন, আমার ছেলে ফাইজুল উলুম কওমি মাদ্রাসায় আবাসিক বোর্ডিংয়ে থেকে পড়ালেখা করত। আসামি মো. ফয়সাল ওই মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট দুপুর ১২টায় আমার ছেলেকে মাদ্রাসা থেকে ওই শিক্ষক বাসায় দিয়ে যায় এবং বলে পরের দিন আবার মাদ্রাসায় পাঠিয়ে দিতে। পরে আমার ছেলে আর মাদ্রাসায় যেতে চায় না। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে সে বলে, মাদ্রাসার শিক্ষক মো. ফয়সাল তাকে বিভিন্ন সময়ে বলাৎকার করে।
এ ঘটনার পরে ওই শিশু ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
জবানবন্দিতে শিশু বলে, আমি ফয়সালের কাছে প্রায় দুই বছর ধরে আরবি হেফজখানায় পড়তাম। সে মাঝে মধ্যে আমার সাথে খারাপ কাজ করত। আমি নিষেধ করলে সে আমাকে ডিশের তার দিয়ে মারধর করত। আমি তার কথায় রাজি না হলে ফজরের সময়ে আমাকে অনেক মারধর করত। যখন ফজর হতো তখন আমাকে মারার বিষয়ে অন্যরা বলত, তোমাকে মারছে কেন? আমি বলতাম, পড়া পারিনি, তাই মারধর করেছে। আমার গায়ে মারধরের অনেক দাগ আছে। আমি যাতে আম্মার কাছে বলতে না পারি সে জন্য আমার আম্মুর কাছে ফয়সাল যেতে দিত না।
মামলার পরে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর সাভার মডেল খানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামাল হোসেন ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে আসামি ফয়সালের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।